রংপুর বিভাগ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং পর্যটনের এক অবিচ্ছেদ্য সমন্বয়।
রংপুর বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।
- আপডেট সময় : ০৪:৩২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
- / 205
রংপুর বিভাগ- এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা। বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল। এই বিভাগের রয়েছে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি।উত্তরবঙ্গের একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন।
বিভাগের জেলা সমূহ
রংপুর বিভাগে মোট ৮টি জেলা রয়েছে। এই জেলাগুলো হলো:
- রংপুর
- দিনাজপুর
- নীলফামারী
- কুড়িগ্রাম
- লালমনিরহাট
- গাইবান্ধা
- ঠাকুরগাঁও
- পঞ্চগড়
রংপুরের ইতিহাস
রংপুর বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা। রংপুর বিভাগের ইতিহাস অনেক পুরনো এবং সমৃদ্ধ। প্রাচীনকালে এই অঞ্চলটি পুন্ড্রবর্ধন নামে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চলে মুঘল এবং ব্রিটিশ শাসন ছিল। ব্রিটিশ শাসনের সময় রংপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।
ভাষা ও সংস্কৃতি ঐতিহাসিক স্থান:
রংপুর পালাক্রমে প্রাগজ্যোতিষের পাশাপাশি কামরূপ, কামতরাজ্য এবং মন্থনকোটকে অনুসরণ করে। এই তথ্য মধ্যযুগীয় মানচিত্রে পাওয়া যায়। রংপু, দূরত্ব, তিস্তা ইত্যাদি নামে একটি ঐতিহাসিক নদী এবং সেই নদীর বিস্তীর্ণ তীরে বসবাসকারী জনপদগুলি প্রথমে: রংপু এবং পরে রংপুরে ভৌগলিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস দেখায়। ১৯৭১ সালের কৈবর্তর দিব্যক এবং তার ভাগ্নে ভীমের বরেন্দ্র অধিকারী, রাজধানী শহর নির্মাণ, একটি নতুন পৃথক সেনাবাহিনী ও রাজ্য স্থাপন এবং রামপালের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে উত্তর বাঙালি আমজনতা যুদ্ধে উত্তর বাঙালির গর্বিত মাত্রা।
সুলতানি আমলে: বীরত্ব যে লেখকরা সুলতানি আমলের ইতিহাসে প্রামাণিকভাবে নথিভুক্ত করেছেন যে (১৪৫৯-৭৪) সালে ঘোড়াঘাট ফৌজদারীর কমান্ডিং অফিসার সুলতান রুকনুদ্দিন বারবক শাহ শাহ ইসমাইল গাজী (রহ.) এবং (১৪৭৪-১৫১৫) সালে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের সময়কালে (১৪৫৯-৭৪) সালে এই সংখ্যাটি ছিল। এই অঞ্চলে সময়ের সাথে সাথে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ এই ফলাফলের কিছু প্রভাবের মধ্যে রয়েছে।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ, ১৯২১ সালে ঢাকায় একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন, ভারত বিভক্তি এবং ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের একটি নতুন আধিপত্য গঠন। ১৯৫২ সালে আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নতুন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয়।
বিভাগের ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে:
প্রতিটি জেলা সাংস্কৃতিক পটভূমিতে ভাগ করে নেয়। ভাষা, খাদ্য ও বাসস্থান, আয়ের উৎস, বিনোদন এমনকি এখানে বসবাসকারী মানুষের ঐতিহ্যও একই। এই শহরের বেশির ভাগ মানুষই কৃষক। মাটির উর্বরতার কারণে প্রায় সব রাজ্যের ধান, ধান, গম, আলু এবং অন্যান্য রবি শস্য আসে এই এলাকা থেকে। এই ক্ষেত্রে উত্তরের জেলাগুলির এই অঞ্চলগুলির একটি স্বতন্ত্র উপভাষা রয়েছে যা তাদের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আলাদা করে।
রংপুরের সংস্কৃতি
রংপুর বিভাগের সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। এখানকার লোকজ সংস্কৃতি, গান, নৃত্য এবং খাদ্য সংস্কৃতি অনেক বৈচিত্র্যময়। পিঠা-পুলির জন্য রংপুর বিশেষভাবে পরিচিত।
বিভাগের অর্থনীতি
রংপুর বিভাগে কৃষি হলো প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। এখানে ধান, গম, আলু এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদন করা হয়। এছাড়া মাছ চাষ এবং পশুপালনও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রংপুর বিভাগের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ:
মশিউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী (১৯৭৯) .হেয়াত মামুদ- মধ্যযুগের কবি। উইলিয়াম বেভারীজ- ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ। বেগম রোকেয়া- বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ- বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও ষষ্ঠ সেনাপ্রধান। আনিসুল হক- লেখক এবং নাট্যকার ও সাংবাদিক। শাহজাদা মিয়া আজাদ- লেখক এবং নাট্যকার ও সাংবাদিক। রাশিদ আসকারী- বাংলা ও ইংরেজি লেখক, প্রাবন্ধিক,কলামিস্ট, অনুবাদক ও ১২তম উপাচার্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর স্বামী ; এম এ ওয়াজেদ মিয়া- একজন পরমাণু বিজ্ঞানী। আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম- বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ও ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি। জি এম কাদের- রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী। নাসির হোসেন- বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার।
আহমেদ হোসেইন- রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী। মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান- ১১তম সেনা প্রধান। মোস্তফা কামাল- বাংলাদেশের ৯ম প্রধান বিচারপতি।
শরীফ ইমাম- শহীদ জননী জাহানারা ইমাম এর স্বামী জাহানারা ইমাম, লেখিকা, কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ। হাসান মাহমুদ খন্দকার- স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। দেবী চৌধুরানী- নারী ব্রিটিশবিরোধী নেত্রী। দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী- ভারতীয় ভাস্কর, চিত্রশিল্পী এবং ললিত কলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সানজিদা ইসলাম-বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সদস্য। মাহবুব আলম, সাহিত্যিক। রফিকুল হক- ছড়াকার, সাংবাদিক। শংকু সমজদার-মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ। আবু সাঈদ- ২০২৪ কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
Credit: www.kalerchithi.com
পর্যটন কেন্দ্র
এইসব কেন্দ্র পর্যটকদের আকর্ষণ করে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হলো:
- তাজহাট জমিদারবাড়ি
- মহারাজা রোড
- চিলমারি নৌবন্দর
- কান্তজীর মন্দির
- শালবন বিহার
- তিস্তা ব্যারেজ;
- কারমাইকেল কলেজ
- ভিন্নজগত পার্ক
- রংপুর চিড়িয়াখানা
- ঘাঘট প্রয়াস পার্ক
- চিকলি বিল ও পার্ক
- হাতী বান্ধা মাজার শরীফ
- কেরামতিয়া মসজিদ ও মাজার
- টাউন হল
- শ্বাশত বাংলা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
- দেওয়ানবাড়ি জমিদার বাড়ি
রংপুরের শিক্ষা ব্যবস্থা
শিক্ষার হার ক্রমবর্ধমান। এখানে রয়েছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
স্বাস্থ্যসেবা
রংপুর বিভাগে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ক্লিনিক রয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এই বিভাগের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
রংপুর বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। এখানে রয়েছে সড়ক, রেল এবং নৌপথ। রংপুর শহর থেকে ঢাকার সাথে সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া রেলপথের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত সম্ভব।
বিভাগের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অনেক উজ্জ্বল। এখানকার কৃষি, শিক্ষা এবং পর্যটন খাতে উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়েছে। সরকারি উদ্যোগ এবং স্থানীয় মানুষের প্রচেষ্টায় রংপুর বিভাগ আরও উন্নত হবে।
মানুষের জীবনযাত্রা
মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ। এখানকার মানুষ অতিথিপরায়ণ এবং বন্ধুসুলভ। তারা নিজেদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে অনেক ভালোবাসে।
বাংলাদেশের একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল। এর ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলি এই বিভাগকে বিশেষ করে তুলেছে। রংপুর বিভাগের উন্নয়নের আরও অনেক সম্ভাবনা রয়েছে।
Frequently Asked Questions
রংপুর বিভাগ কোথায় অবস্থিত?
বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত।
রংপুর বিভাগের প্রধান শহর কোনটি?
রংপুর শহর রংপুর বিভাগের প্রধান শহর।
রংপুর বিভাগের ইতিহাস কি?
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
রংপুর বিভাগের বিখ্যাত স্থানগুলি কি কি?
তাজহাট জমিদার বাড়ি, রংপুর চিড়িয়াখানা, কান্তজীর মন্দির বিখ্যাত স্থান।
One thought on “রংপুর বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।”