খুলনা বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।
- আপডেট সময় : ০৪:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
- / 361
খুলনা বিভাগ- বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত। রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এই বিভাগটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
খুলনা বিভাগের ভৌগোলিক অবস্থা
ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত। এই বিভাগের জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র।
খুলনা বিভাগের জেলা সমূহ
মোট ১০টি জেলা রয়েছে। নিচে সেই জেলার তালিকা দেওয়া হলো:
- খুলনা
- যশোর
- সাতক্ষীরা
- বাগেরহাট
- চুয়াডাঙ্গা
- মেহেরপুর
- কুষ্টিয়া
- ঝিনাইদহ
- নড়াইল
- মাগুরা
খুলনা বিভাগের ইতিহাস
ইতিহাস অনেক পুরনো, এটি প্রাচীনকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। মুঘল আমলে খুলনা শহর প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ করে।
ব্রিটিশ শাসনামলে খুলনা
ব্রিটিশ শাসনামলে একটি প্রধান বন্দর ছিল। এখান থেকে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হতো। তখন অনেক ব্যবসায়ী বসবাস করতেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধ ও খুলনা
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে,মুক্তিযোদ্ধারা এখানে অনেক সংগ্রাম করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নতুনভাবে গড়ে ওঠে।
খুলনা বিভাগের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ :
খান জাহান আলী- ইসলাম ধর্ম প্রচারক। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়- রসায়নবিদ, বিজ্ঞান শিক্ষক, দার্শনিক, কবি। মৃণালিনী দেবী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহধর্মিনী। রসিকলাল দাস-ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা। অতুল সেন – ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদ বিপ্লবী। বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায় – জমিদারতন্ত্র বিরোধী কৃষক আন্দোলনের ঐতিহাসিক নেতা ও সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ।
শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস – সাবেক সাংসদ, শিক্ষাবিদ এবং ইসলামি রাজনীতিবিদ।এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ (১ ডিসেম্বর ১৯৬৩) – ১৭তম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান। সাহিত্যিক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান। কবি- ফররুখ আহমদ। কবি- সৈয়দ আলী আহসান। কবি- কাজী কাদের নেওয়াজ। ছড়াকার- আবু সালেহ। কবি- যতীন্দ্রমোহন বাগচী। বীরশ্রেষ্ঠ- মোহাম্মদ হামিদুর রহমান,নূর মোহাম্মদ শেখ। মোহাম্মদ আবদুল গাফফার হালদার – বীর উত্তম।
সাকিব আল হাসান – ক্রিকেটার -অধিনায়ক । মাশরাফি বিন মুর্তজা – অধিনায়ক – বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। আব্দুর রাজ্জাক – ক্রিকেটার। সৌম্য সরকার – ক্রিকেটার। মোস্তাফিজুর রহমান ক্রিকেটার। এনামুল হক – ক্রিকেটার। ইমরুল কায়েস – ক্রিকেটার। তুষার ইমরান – সাবেক ক্রিকেটার। সৈয়দ রাসেল – সাবেক ক্রিকেটার। জিয়াউর রহমান- ক্রিকেটার। মেহেদী হাসান – বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সালমা খাতুন – অধিনায়ক জাতীয় নারী ক্রিকেট দল।
ববিতা – চিত্রনায়িকা। সুচন্দা – চিত্রনায়িকা। চম্পা (অভিনেত্রী) – চিত্রনায়িকা।ওমর সানী – চলচ্চিত্র অভিনেতা। মৌসুমী – চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। সালাউদ্দিন লাভলু – চিত্রপরিচালক। আসিফ ইমরোজ – চিত্রনায়ক।
সমগ্র খুলনা বিভাগের জন্মগ্রহন করা বিখ্যাত ব্যক্তিরা (তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া )
Credit: twitter.com
খুলনার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য খুব সমৃদ্ধ, এখানকার মানুষ তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত। অঞ্চলের বিভিন্ন উৎসব ও মেলা এখানে বিশেষভাবে পালিত হয়।
খুলনার মেলা ও উৎসব
বিভিন্ন মেলা ও উৎসব অনেক জনপ্রিয়। কিছু উল্লেখযোগ্য মেলা ও উৎসব হলো:
- পহেলা বৈশাখ
- দুর্গাপূজা
- নববর্ষ মেলা
- বাউল মেলা
খুলনার পর্যটন স্থান
অনেক সুন্দর পর্যটন স্থান রয়েছে। এই স্থানগুলো প্রতিদিন হাজারো পর্যটক আকর্ষণ করে। খুলনার কিছু উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থান হলো:
- সুন্দরবন
- সাতক্ষীরার যশোর রোড
- বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ
- খুলনার রূপসা নদী
সুন্দরবন
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এটি বিভাগের একটি প্রধান আকর্ষণ। সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখা যায়।
ষাট গম্বুজ মসজিদ
ষাট গম্বুজ মসজিদ একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এটি বাগেরহাটে অবস্থিত। এই মসজিদটি ১৫শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়।
খুলনার অর্থনীতি
অর্থনীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিভাগে কৃষি, মৎস্য ও শিল্প খাত প্রধান। প্রচুর চিংড়ি চাষ হয়। এখানে অনেক রপ্তানিমুখী শিল্প রয়েছে।
কৃষি খাত
কৃষি খাত খুবই সমৃদ্ধ। এখানে ধান, গম, আলু ও সবজি চাষ হয়। কৃষকেরা তাদের ফসল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করেন।
মৎস্য খাত
মৎস্য চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানে চিংড়ি চাষ বিশেষভাবে জনপ্রিয়। দেশের চিংড়ি রপ্তানির একটি বড় অংশ থেকে আসে।
শিল্প খাত
বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে টেক্সটাইল, জাহাজ নির্মাণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প রয়েছে। এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি খুলনার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Credit: www.facebook.com
খুলনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল রয়েছে। কিছু উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো:
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয় একটি উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
কুয়েট
কুয়েট একটি বিশেষায়িত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,এটি শহরে অবস্থিত। কুয়েটে বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগ রয়েছে ।
বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিভাগের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থাপত্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বিভাগের মানুষ তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির জন্য গর্বিত।
বিষয় | তথ্য |
---|---|
প্রতিষ্ঠিত | ১৯৬০ |
জেলার সংখ্যা | ১০ |
বিখ্যাত স্থান | সুন্দরবন, ষাট গম্বুজ মসজিদ |
প্রধান অর্থনৈতিক খাত | কৃষি, মৎস্য, শিল্প |
Frequently Asked Questions
বিভাগের অবস্থান কোথায়?
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি সুন্দরবনের জন্য বিখ্যাত।
খুলনা বিভাগের প্রধান শহর কোনটি?
বিভাগের প্রধান শহর খুলনা। এটি বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র।
খুলনা বিভাগের মোট জেলা কয়টি?
বিভাগে মোট ১০টি জেলা রয়েছে। প্রতিটি জেলার নিজস্ব ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে।
খুলনা বিভাগের প্রধান নদী কোনটি?
বিভাগের প্রধান নদী রূপসা। এটি জীবিকা ও পরিবহণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
2 thoughts on “খুলনা বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।”