সিলেট বিভাগ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম উৎস।
সিলেট বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।
- আপডেট সময় : ০৪:৩২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
- / 169
সিলেট বিভাগ- এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা- সমৃদ্ধ , বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি , অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মন কাড়ে। জাফলং, রাতারগুল, লালাখাল, হাম হাম ঝর্ণা সহ আরো অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে। চা বাগান, হাওর এবং বনভূমিও অনন্য । ভ্রমণের মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন দিক উপভোগ করতে পারবেন।
সিলেট বিভাগের অবস্থান:
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এর উত্তরে ভারতের মেঘালয় , পূর্বে ভারতের আসাম , দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগ।
বিভাগে চারটি জেলা রয়েছে। এই জেলাগুলো হল;
- সিলেট জেলা
- মৌলভীবাজার জেলা
- হবিগঞ্জ জেলা
- সুনামগঞ্জ জেলা
ইতিহাস
সিলেট বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা- অনেক পুরনো,এই অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসকের অধীনে ছিল।
প্রাচীনকাল
প্রাচীনকালে সিলেট অঞ্চল ছিল অসম রাজ্যের অংশ। এই অঞ্চলে বিভিন্ন নৃপতির শাসন ছিল।
মধ্যযুগ
মধ্যযুগে সিলেট অঞ্চলে মুসলিম শাসনের প্রভাব শুরু হয়। ১৩০৩ সালে হজরত শাহজালাল (রহ.) এই অঞ্চলে আসেন এবং ইসলাম প্রচার করেন।
ব্রিটিশ আমল
ব্রিটিশ আমলে সিলেট অঞ্চল আসাম প্রদেশের অংশ ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় সিলেট পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) অংশ হয়।
সিলেট বিভাগ এর বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ:
হযরত শাহজালাল (রহঃ) ,হযরত শাহ পরান (রহঃ) .মৌলভী আবদুল করিম – বাঙালি শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবক। হাসন রাজা- মরমি কবি। শাহ আবদুল করিম -বাউলসম্রাট । রুকন খান – আলাউদ্দিন হোসেন শাহের মন্ত্রী এবং সেনাপতি।রাজা গিরিশচন্দ্র রায়- সমাজসেবক। বিপিনচন্দ্র পাল-ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান নেতা। মহাকবি সঞ্জয় -মহাভারতের প্রথম বাংলা অনুবাদক। সুহাসিনী দাস- ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী। শিতালং শাহ-সুফি কবি। মহাকবি শেখ চান্দ – মধ্যযুগের বিখ্যাত কবি।
আতাউল গণি ওসমানী-মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। সৈয়দ মুজতবা আলী- সাহিত্যিক। চৈতন্য মহাপ্রভু- বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক। মেজর জেনারেল এম এ রব-মুক্তিযুদ্ধের চীফ অব স্টাফ। সৈয়দ সুলতান -মধ্যযুগের বিখ্যাত কবি। সৈয়দ মুর্তাজা আলী -ইতিহাসবিদ। স্যার ফজলে হাসান আবেদ-সমাজসেবক। আলী আমজাদ খান-সমাজসেবক ও জমিদার। লীলা দত্ত নাগ-ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা এবং ঢাবির প্রথম ছাত্রী।
সন্তদাস কাঠিয়াবাবা-বাংলার প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল। ফজলুল হক সেলবর্ষী -বিপ্লবী সাংবাদিক ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা। রামনাথ বিশ্বাস -বিখ্যাত ভূপর্যটক। এম এ রশীদ -বুয়েটের প্রথম উপাচার্য। এম সাইফুর রহমান-রাজনীতিবিদ। আলতাফ হোসেইন -বিখ্যাত সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। শাহেদ আলী -কথাসাহিত্যিক। রুনা লায়লা -কণ্ঠশিল্পী। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত -রাজনীতিবিদ, রেলমন্ত্রী। সালমান শাহ-চিত্রনায়ক। রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান-সাবেক উপ-সামরিক আইন প্রশাসক, নৌবাহিনী প্রধান এবং যোগাযোগ ও কৃষিমন্ত্রী
সুবীর নন্দী-কণ্ঠশিল্পী।
মেজর জেনারেল সি আর দত্ত বীর উত্তম- মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। শাহ এ এম এস কিবরিয়া -রাজনীতিবিদ। নুরুল ইসলাম নাহিদ -রাজনীতিবিদ, শিক্ষামন্ত্রী। ডক্টর আতাউল করিম-বিজ্ঞানী। জামিলুর রেজা চৌধুরী-শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী। সিরাজুল হোসেন খান -রাজনীতিবিদ। অমিতাভ চৌধুরী – ম্যাগসাসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান -পরিবেশবিদ। হাসান মশহুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি। বিপ্লবী হেনা দাস-ব্রিটিশ বিরোধী নেতা । এ কে আব্দুল মোমেন- সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ডক্টর আবেদ চৌধুরী- একজন প্রখ্যাত জিনবিজ্ঞানী।
কাঁকন বিবি-নারী মুক্তিযোদ্ধা ও গুপ্তচর। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম-রাজনীতিবিদ, সামরিক কর্মকর্তা ও কূটনীতিজ্ঞ। যতীন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য-সাহিত্য গবেষক। দুর্বিন শাহ- মরমী গীতিকবি, ভাষ্যকার, বাউলসাধক। রফিক উদ্দিন আহমেদ (বিজ্ঞানী), নাসার অ্যাপোলো ১১ চন্দ্র অভিযানে অংশগ্রহণকারী বাঙালি বিজ্ঞানী। ইকবাল হোসাইন চৌধুরী- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী। এম এ মান্নান -পরিকল্পনামন্ত্রী। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ – রাজনীতিবিদ, ডাকসুর সাবেক ভিপি। জগদীশ ভট্টাচার্য – সাহিত্যিক। সৈয়দ জে. আর. মোদাচ্ছির হোসেন – সাবেক প্রধান বিচারপতি।
হামজা চৌধুরী – আন্তর্জাতিক ফুটবলার। খলিল খান- অভিনেতা। লুৎফর রহমান চৌধুরী -নাইট উপাধিপ্রাপ্ত ব্রিটিশ বিচারপতি। কমরেড অজয় ভট্টাচার্য -নানকার কৃষক বিদ্রোহের নেতা। সঞ্জীব চৌধুরী – সংগীতশিল্পী। শমসের মবিন চৌধুরী -রাজনীতিবিদ। হাসান শাহরিয়ার – সাংবাদিক। রুশনারা আলী -ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ। ইলিয়াস আলী -রাজনীতিবিদ। হারিস চৌধুরী- রাজনীতিবিদ। মতিউর রহমান চৌধুরী – সাংবাদিক, মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। শুভাগত চৌধুরী – চিকিৎসক, লেখক ও সাহিত্যিক।
(তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া )
সংস্কৃতি
সিলেটের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখানে বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা এবং সংস্কৃতির মানুষের বসবাস।
সিলেট বিভাগের ভাষা
সিলেটের প্রধান ভাষা হলো সিলেটি। এছাড়াও বাংলা ভাষা প্রচলিত।
ধর্ম
সিলেটে মুসলমান, হিন্দু এবং খ্রিস্টান ধর্মের মানুষের বসবাস। মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি।
খাদ্য
সিলেটের খাবার বিভিন্ন রকমের হয়। এখানে মিষ্টি পান এবং সাতকরার জনপ্রিয়।
পর্যটন স্থান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর। এখানে অনেক পর্যটন স্থান রয়েছে।
পর্যটন স্থান | বিবরণ |
---|---|
জাফলং | জাফলং সিলেটের একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান। এখানে পাহাড় ও নদীর সৌন্দর্য মুগ্ধ করে। |
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট | রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র মিঠা পানির জলাবন। এখানে নৌকাভ্রমণ জনপ্রিয়। |
লালাখাল | লালাখাল একটি নীল পানির নদী। এখানে নৌকাভ্রমণ করলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। |
হাম হাম ঝর্ণা | হাম হাম ঝর্ণা সিলেটের একটি সুন্দর জলপ্রপাত। এটি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত। |
সিলেটের মানুষ
সিলেটের মানুষ অতিথিপরায়ণ এবং আন্তরিক। তারা সংস্কৃতিমনা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পছন্দ করে।
অর্থনীতি
সিলেটের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। এছাড়াও প্রবাসী আয়ের বড় অংশ সিলেটে আসে।
শিক্ষা
সিলেটে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।
Credit: www.researchgate.net
Credit: m.facebook.com
সিলেট বিভাগের তার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল।
Frequently Asked Questions
সিলেট এর ইতিহাস কি?
সিলেট বিভাগের ইতিহাস প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এটি মধ্যযুগীয় রাজাদের শাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রধান শহর কি?
সিলেট প্রধান শহর। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
সিলেট বিভাগে কিভাবে যাওয়া যায়?
বিমান, ট্রেন, বাস এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে যাওয়া যায়। বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থা সহজলভ্য।
সিলেট এর প্রধান আকর্ষণ কি?
প্রধান আকর্ষণ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পর্যটন স্থান। চা বাগান, জলপ্রপাত, এবং হাওর খুবই জনপ্রিয়।
One thought on “সিলেট বিভাগ এর পরিচিতি ও ইতিহাস বর্ণনা।”