মিস মাল্টিন্যাশনাল সুমাইয়া হারুন গ্ল্যামারের জগৎ থেকে বেরিয়ে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। র‌্যাম্পের উজ্জ্বল আলোয় দর্শকদের মুগ্ধ করছেন, তিনি এখন সাহসের সাথে একটি সম্পূর্ণ নতুন মঞ্চ, উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত এই বাংলাদেশি মডেল এখন বহুমাত্রিক প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি সৌন্দর্য এবং ফ্যাশনের বাইরের জগতেও সাফল্যের নতুন সীমানা ভেঙে যাচ্ছেন।

সুমাইয়া হারুন এর সৌন্দর্য থেকে আত্মবিশ্বাস

সুমাইয়া হারুনের মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে মিস মাল্টিন্যাশনাল বাংলাদেশ খেতাব জয়ের মাধ্যমে। সেই সময় থেকেই তার ক্যারিয়ার সক্রিয়। তিনি দ্রুত বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি একের পর এক ফটোশুট, একটি বিজ্ঞাপন এবং র‍্যাম্প শো দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেন। তবে, তিনি কেবল সংখ্যার পিছনে যাননি, বরং তিনি তার কাজের মানের উপর মনোযোগ দিয়েছেন। সুমাইয়া উত্তর দেন, আমি গুণমান ছাড়া কিছুই করতে চাই না। আমি দর্শকদের একটি সুন্দর কাজ প্রদানে মনোনিবেশ করছি। এই মনোভাবই তাকে অন্যান্য অনেক প্রতিযোগীর মধ্যে আলাদা করে তুলেছে।

সুমাইয়া হারুন ফ্যাশন থেকে ভিন্ন পথে

২০২৩ সালে মিস মাল্টিন্যাশনাল বাংলাদেশ খেতাব জয় করে সুমাইয়া হারুন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে সবার নজর কাড়েন। এরপর থেকে তার পথচলা আর থেমে থাকেনি। একের পর এক ফ্যাশন শো, আন্তর্জাতিক মানের ফটোশুট এবং বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে খুব অল্প সময়েই তিনি দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তবে অন্যদের মতো সংখ্যার পেছনে না ছুটে, সুমাইয়া সব সময় কাজের মানকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তার কথায়, “কোয়ালিটি ছাড়া আমি কোনো কাজ করতে চাই না। দর্শককে ভালো কাজ উপহার দিতেই আমার সব চেষ্টার ফোকাস।”

র‍্যাম্পের গ্ল্যামার আর ফ্যাশনের জগত থেকে সুমাইয়ার নতুন পথচলা এখন ব্যবসার দুনিয়ায়। বর্তমানে তিনি কানাডিয়ান ওভারসিজ বিজনেস ইনকর্পোরেটেড-এর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছেন। এই পদে তিনি প্রবাসী ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক তৈরি, বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি এবং নতুন নতুন ব্যবসার সম্ভাবনা খুঁজে বের করার কাজে যুক্ত আছেন।

সুমাইয়া হারুন অভিনয়ের সুযোগ এবং নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গি।

মডেলিং ছাড়াও সুমাইয়া হারুনকে অনেক অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সেগুলিকে মুখ ফুটে নেননি। যেহেতু তিনি কেবল প্রচার পাওয়ার জন্য ক্যামেরার সামনে থাকতে চান না। তিনি ভিন্ন এবং শক্তিশালী গল্প এবং চরিত্র খুঁজছেন। এই কারণেই তিনি অসংখ্য প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবুও, তিনি রেজানা মরিয়ম নূর শিরোনামের মতো শৈল্পিক ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এটি দেখায় যে তিনি শিল্পকে কতটা সম্মান করেন এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন উদ্যোগ।

র‌্যাম্পের কৃতিত্বের পর ব্যবসায়িক জগতে আসা সুমাইয়া এটি তার নতুন পদক্ষেপ। তিনি বর্তমানে কানাডিয়ান ওভারসিজ বিজনেস ইনকর্পোরেটেডের সাথে একজন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবে নিযুক্ত। এই পদে, তিনি বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছেন এবং উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সুযোগ খুঁজছেন এমন প্রবাসী ব্যবসায়ীদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করছেন। তার নতুন পদ তার জীবনে একটি নতুন দিক উপস্থাপন করেছে।

আরও পড়ুন-শামীম খান সামি বাংলাদেশী সঙ্গীত পরিচালক ।

তিনি ২০ এবং ২১ নভেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫-এও যাবেন। বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তাদের এমন একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকাকে তিনি তার পেশাগত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করেন। সুমাইয়া উত্তর দিয়েছিলেন, মডেলিং এবং ব্যবসা সম্পূর্ণ ভিন্ন জগৎ হওয়া সত্ত্বেও, আমি উভয়কেই ধরে রাখতে পারি এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে পারি। এই প্রসঙ্গে, আমি বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ এম. হায়দার উজ্জামানের বিশেষ প্রশংসা করতে চাই।

সুমাইয়া হারুন এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সুমাইয়া হারুন উত্তর দিয়েছিলেন যে তার ভবিষ্যতের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভালো কাজের বিকল্প নেই। আমি হয়তো কম কাজ করতে পারি, কিন্তু আমি মানকে ত্যাগ করতে চাই না। তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি আগামী ফেব্রুয়ারিতে টরন্টো সফর করবেন এবং কিছু আন্তর্জাতিক প্রকল্পের আশা করছেন।

সুমাইয়া হারুনের রূপান্তর একটি ইঙ্গিত দেয় যে একজন সফল মডেলের সৌন্দর্য এবং গ্ল্যামার থাকতে হয় না, তবুও তিনি সম্পূর্ণ নতুন ক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন এবং তার প্রতিভা এবং বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগাতে পারেন। তার জীবনের অভিজ্ঞতা, যা শুরু হয়েছিল র‍্যাম্পে এক মনোমুগ্ধকর হাঁটা দিয়ে এবং তারপর একজন উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসার জগতে,তরুণদের জন্য চোখ খুলে দিতে পারে। তার প্রতিভা এবং ইচ্ছাশক্তি দিয়ে একাধিক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারে। তিনি কেবল একজন মডেল নন, বরং একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, যিনি তার মেধা এবং কঠোর পরিশ্রম দিয়ে ফ্যাশনের গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক উদ্যোক্তা সমাজে নিজের স্থান করে নিচ্ছেন।