মাগুরা জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

- আপডেট সময় : ০৯:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে
মাগুরা জেলার সম্পর্কে জানুন কারণ এটি বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এই জেলা থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে এর পরিচয় ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো।
মাগুরা জেলার ইতিহাস:
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মাগুরা শহরটি অবস্থিত। ১৭৮৬ সাল থেকে ব্রিটিশ প্রশাসনের অস্তিত্বের সময় যশোর বাংলা প্রদেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত প্রথম জেলা হিসেবে কাজ করত। এই বিশাল জেলায় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের সময় একজন জেলা কর্মকর্তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সম্পূর্ণ অক্ষমতা অনুভব করেছিলেন। ১৮৪৫ সালে ব্রিটিশরা যশোর জেলার প্রথম মহকুমা হিসেবে মাগুরাকে প্রতিষ্ঠা করে, যার উদ্দেশ্য ছিল উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মুঘল জলদস্যুতা থেকে রক্ষা করা।
মাগুরা জেলার নামকরণ:
মুঘল আমলে শাসকরা মাগুরা নামটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাসে এর নামের সঠিক উৎপত্তি সম্পর্কে কোন তথ্য নেই। স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে, ঐতিহাসিক সময়ে সুন্দরবনের কাছাকাছি এই অঞ্চলে মুঘল জলদস্যুরা ব্যাপকভাবে বিকশিত হত। এই অপরাধমূলক ঘাঁটিটি বর্তমান মাগুরা শহর থেকে পরিচালিত হত যা কুমার নদী এবং নবগঙ্গার মধ্যে অবস্থিত।
মুঘল আমলে বর্গীরা নদীপথে ডাকাতি করত। তাদের নামেই মাগুরার নামকরণ করা হয়েছিল। মুঘল নবাব মুর্শিদ কুলি খার যেখানে মগদের অগ্রযাত্রা থামিয়েছিলেন এবং তা উল্টে দিয়েছিলেন, সেই অঞ্চলটি তার শাসনামলে মাগ-ঘুরা নামে পরিচিতি লাভ করে। মাগ-ঘুরা পরবর্তীতে মাগুরা হয়ে ওঠে।
ভিডিও তে দেখুন মাগুরা জেলার দর্শনীয় স্থান…
ভিডিও ক্রেডিট: Vromon Pipashu ভ্রমন পিপাসু
মাগুরা জেলার পরিচিতি:
জেলাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে অবস্থিত। জেলাটি খুলনা বিভাগের অন্তর্গত। জেলাটির আয়তন ১০৪৮.৬১ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৯ লক্ষ। এই অঞ্চলে বাঙালিরা প্রধান ভাষাভাষী সম্প্রদায় হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। মাগুরা জেলার কেন্দ্রীয় পৌর এলাকা মাগুরা সদরে অবস্থিত।
মাগুরা জেলার অর্থনীতি:
এই এলাকার প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হল কৃষি কারণ ধান পাট এবং গম উৎপাদনের সাথে মিশে যায়। মাগুরা জেলায় মাছ চাষের অনুশীলন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ধান,পাট,গম, মাছ সহ আরো অনেক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড রয়েছে।
মাগুরার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ
ফররুখ আহমদ – সাহিত্যিক, অমলা শংকর,অরূপ কুমার বৈদ্য,আজীজুল হক,আবদুল মোতালেব (বীর বিক্রম),আবু সালেহ,আব্দুল হালিম,আমির হামজা (কবি),আলমগীর রহমান, ক্রিকেটার -সাকিব আল হাসান , এম ইউসুফ আলী,এম. এ. মতিন (মাগুরার রাজনীতিবিদ)
কাজী রওশন আক্তার,কাজী সালিমুল হক কামাল,কামরুল লায়লা জলি,গঙ্গাধর সেন রায়,জয় চৌধুরী, জাকিয়া সুলতানা কর্ণিয়া, দিদার ইসলাম,নাজমুল হুদা বাচ্চু,নিতাই রায় চৌধুরী,নিমাই ভট্টাচার্য,প্রবোধচন্দ্র বাগচী,ফররুখ আহমদ,ফাহিমা খাতুন,বনানী চৌধুরী,বেগম শামসুন নাহার আহমেদ,মজিদ-উল-হক,মাহমুদুল হাসান ফয়সাল,মিয়া আকবর হোসেন,মীর হাসেম আলী,মুন্সী রইসউদ্দিন,মেহেদী হাসান রয়েল,মোঃ আকরাম-আল-হোসেন,মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান,মোহাম্মদ গোলাম ইয়াকুব,মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন,মোহাম্মদ মিন্টু শেখ,মোহাম্মদ রহমত মিয়া,মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর,রাজা সীতারাম রায়,মোহাম্মদ লুৎফর রহমান,লুৎফুন্নাহার হেলেন,শামীমা সুলতানা,শারমিন রত্না,শেখ হবিবর রহমান,শহীদুল আলম সাচ্চু,সাদাত রহমান,সিরাজুদ্দীন হোসেন,সৈয়দ আতর আলী,সৈয়দ আমীরুজ্জামান,সৈয়দ আলী আশরাফ,সৈয়দ আলী আহসান,সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন,হাসান সিরাজ সুজা।
আরও পড়ুন – ঠাকুরগাঁও জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
মাগুরা জেলার সংস্কৃতি:
মাগুরার সম্প্রদায়গত ঐতিহ্য অসাধারণভাবে প্রচুর। এখানকার মানুষ বিভিন্ন উৎসব উদযাপন করে। যেমন পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূজা, ঈদ ইত্যাদি।
বৈশাখী মেলা:
মাগুরা জেলা জুড়ে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলা প্রধান সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে পরিচিত। এই স্থানে বিভিন্ন ধরণের মেলা এবং বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।
নৃত্য এবং গান:
এই জেলার বেশিরভাগ বাসিন্দা নাচের পাশাপাশি গান গাওয়াও উপভোগ করেন। বিভিন্ন উৎসবে সম্প্রদায়ের সদস্যদের নৃত্য পরিবেশনার পাশাপাশি গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখা যায়।
দেশীয় সঙ্গীত
বাউল গান
লোক নৃত্য

মাগুরা জেলার পর্যটন:
মাগুরা জেলা জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটকদের এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিস্ময় উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে, এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থানগুলি দর্শনার্থীদের অতীতের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলি আবিষ্কার করতে সাহায্য করে।
দর্শনীয় স্থান:
মুসলিম নবজাগরণের ধর্মগুরু ফররুখ আহমেদের বাড়ি,চণ্ডীদাস ও রাজকিনির আক্ষরিক ঘাট,শ্রীপুর জমিদার বাড়ি,ধর্মগুরু কাজী কাদের নেওয়াজের বাড়ি,সিদ্ধেশ্বরী মঠ,গড়াই সেতু,চন্দ্র জমিদার বাড়ি,রাজা সীতারাম রায়ের প্রাসাদ – দুর্গ,পীর হযরত গরীব শাহ (রহ.)-এর মাজার শরীফ-শ্রীপুর,বড়াল রাজার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ, বিরাট রাজার বাড়ি ।
নবগঙ্গা নদী:
মাগুরা জেলা নবগঙ্গা নদীতে তার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে। নদীর তীরে প্রকৃতির অতুলনীয় দৃশ্য দেখা যায় যা কেউ তার ধারে বসে আরাম করে উপভোগ করতে পারে।
জলাশয়:
মাগুরা জেলায় অসংখ্য অত্যাশ্চর্য জলরাশি বিদ্যমান। এই স্থানে মানুষ মাছ ধরা এবং নৌকা চালানোর কাজে অংশ নিতে পারে।
মাগুরা জেলার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য:
নদী সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে বেশ কয়েকটি নদী প্রবাহিত হয়। নদীগুলি এই অঞ্চলে কৃষির জন্য সম্পূরক সম্পদ হিসেবে কাজ করে।
মাগুরা জেলা বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে তার অবস্থান বজায় রেখেছে। এই অঞ্চলে সমৃদ্ধ মানুষ, সংস্কৃতি এবং সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড রয়েছে। মাগুরা জেলার মূল বাসিন্দারা তাদের দেশের প্রতি দেশপ্রেম পোষণ করেন। মাগুরা জেলার উল্লেখযোগ্য বাসিন্দারা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের দক্ষতা নিয়ে এসেছেন। ঐতিহাসিক স্থান এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য মাগুরা জেলায় পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মাগুরা জেলার ঐতিহ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
F A Q
মাগুরা জেলা কোথায় অবস্থিত?
জেলাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত যা খুলনা বিভাগের অধীনে পড়ে।
মাগুরা জেলায় মানুষকে আনার প্রধান আকর্ষণ কোথায়?
দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলিকে জেলার প্রধান আকর্ষণ বলে মনে করেন।
মাগুরা জেলা এমন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে যাদেরকে আজ জনগণ চেনে?
শেখ কামাল এবং আব্দুল হামিদ মাগুরা জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাসিন্দাদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব করেন।
মাগুরার ঐতিহাসিক বিকাশ কোন পথ অনুসরণ করেছে তা উন্মোচিত করে?
প্রাচীন বাংলার ঐতিহাসিক বিকাশ মাগুরা জেলার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
মাগুরা জেলায় কোন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিরাজমান?
কৃষি ও ক্ষুদ্র শিল্প জেলার অর্থনীতিকে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
মাগুরা জেলায় কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়?
পহেলা বৈশাখ এবং ঈদ মাগুরা জেলায় পালিত দুটি প্রধান ছুটির দিন।