ঢাকা ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশের ১৭% মানুষ পানি সংগ্রহ করার পেছনে আধাঘন্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে।

বাংলাদেশে পানি সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যয় হয়।

অনলাইন ডেস্ক,
  • আপডেট সময় : ০১:০০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
  • / 303

ছবি : UNICEF Bangladesh

বাংলাদেশ, নদীমাতৃক দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও, বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য সুপেয় পানি এখনও বিলাসবহুল। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (UNICEF) এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিদিন ১৭% বাংলাদেশি, যার মধ্যে ৯০% নারী ও শিশু, তাদের প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহের জন্য ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে। আরও ভয়াবহ, ৬% মানুষের জন্য এই সময় এক থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়।

এই দীর্ঘ সময় ধরে পানি বহন করা কেবল শারীরিকভাবেই ক্লান্তিকর নয়, এর মানসিক প্রভাবও মারাত্মক। নারী ও শিশুরা, যারা এই কাজের বেশিরভাগ বোঝা বহন করে, তাদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে।

এই সমস্যা সমাধানে সরকার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। গ্রামীণ এলাকায় নলকূপ স্থাপন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং পানি সংগ্রহের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রচার এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

শারীরিক বিভিন্ন অসুবিধা:
পানি বহনের কারণে শারীরিক পরিশ্রমের ফলে পিঠে ব্যথা, মাথাব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে, এটি অপুষ্টি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতার দিকে ধাবিত করতে পারে।দীর্ঘ সময় ধরে পানি বহনের মানসিক চাপ মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস পায়। নারীদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ হ্রাস পায়। পানি সংগ্রহের বোঝা বহনকারী নারীরা লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য এবং সামাজিক বঞ্চনার শিকার হন।

শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস: বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে তাদের স্কুলে যাওয়ার সময় কমে যায় এবং শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস পায়। শিক্ষার মান নিম্নমুখী, পানি সংগ্রহের কাজের ক্লান্তি ও মানসিক চাপের ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কমে যায় এবং শিক্ষার মান নিম্নমুখী হয়।

খরাপ্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে, পানি সংগ্রহের জন্য মানুষকে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটতে হয়। উপকূলীয় এলাকায়, লবণাক্ত পানির কারণে পানি সংকট দেখা দেয়। ঢাকার মতো বড় শহরগুলিতে, নিম্ন আয়ের মানুষ দূষিত পানি কিনতে বাধ্য হয়।যদিও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তবে সমস্যা সমাধানে এখনও অনেক অগ্রগতি অবশিষ্ট। নলকূপ স্থাপনের অগ্রগতি ধীর, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায়শই অপ্রতুল এবং অনুপযুক্ত, এবং প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত।

সকলের জন্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা। গ্রামে নলকূপ স্থাপন এবং শহরে পাইপলাইন ব্যবস্থা আরও ব্যাপক করা প্রয়োজন। মানুষকে পানি সংরক্ষণ ও বৃষ্টির জল সংগ্রহ সম্পর্কে শিক্ষিত করা উচিত। এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে পারে। তৃতীয়ত, পরিবারগুলিকে বৃষ্টির জল সংগ্রহের জন্য পাত্র বিতরণ করা উচিত। এছাড়াও, নারীদের ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষিত করা এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের ১৭% মানুষ পানি সংগ্রহ করার পেছনে আধাঘন্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে।

বাংলাদেশে পানি সংগ্রহের জন্য অনেক সময় ব্যয় হয়।

আপডেট সময় : ০১:০০:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

বাংলাদেশ, নদীমাতৃক দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও, বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য সুপেয় পানি এখনও বিলাসবহুল। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (UNICEF) এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিদিন ১৭% বাংলাদেশি, যার মধ্যে ৯০% নারী ও শিশু, তাদের প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহের জন্য ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে। আরও ভয়াবহ, ৬% মানুষের জন্য এই সময় এক থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়।

এই দীর্ঘ সময় ধরে পানি বহন করা কেবল শারীরিকভাবেই ক্লান্তিকর নয়, এর মানসিক প্রভাবও মারাত্মক। নারী ও শিশুরা, যারা এই কাজের বেশিরভাগ বোঝা বহন করে, তাদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে।

এই সমস্যা সমাধানে সরকার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। গ্রামীণ এলাকায় নলকূপ স্থাপন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং পানি সংগ্রহের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রচার এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

শারীরিক বিভিন্ন অসুবিধা:
পানি বহনের কারণে শারীরিক পরিশ্রমের ফলে পিঠে ব্যথা, মাথাব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে, এটি অপুষ্টি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতার দিকে ধাবিত করতে পারে।দীর্ঘ সময় ধরে পানি বহনের মানসিক চাপ মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস পায়। নারীদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ হ্রাস পায়। পানি সংগ্রহের বোঝা বহনকারী নারীরা লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য এবং সামাজিক বঞ্চনার শিকার হন।

শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস: বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে, পানি সংগ্রহের জন্য সময় ব্যয় করার ফলে তাদের স্কুলে যাওয়ার সময় কমে যায় এবং শিক্ষাগত সুযোগ হ্রাস পায়। শিক্ষার মান নিম্নমুখী, পানি সংগ্রহের কাজের ক্লান্তি ও মানসিক চাপের ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কমে যায় এবং শিক্ষার মান নিম্নমুখী হয়।

খরাপ্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে, পানি সংগ্রহের জন্য মানুষকে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটতে হয়। উপকূলীয় এলাকায়, লবণাক্ত পানির কারণে পানি সংকট দেখা দেয়। ঢাকার মতো বড় শহরগুলিতে, নিম্ন আয়ের মানুষ দূষিত পানি কিনতে বাধ্য হয়।যদিও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তবে সমস্যা সমাধানে এখনও অনেক অগ্রগতি অবশিষ্ট। নলকূপ স্থাপনের অগ্রগতি ধীর, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায়শই অপ্রতুল এবং অনুপযুক্ত, এবং প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত।

সকলের জন্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা। গ্রামে নলকূপ স্থাপন এবং শহরে পাইপলাইন ব্যবস্থা আরও ব্যাপক করা প্রয়োজন। মানুষকে পানি সংরক্ষণ ও বৃষ্টির জল সংগ্রহ সম্পর্কে শিক্ষিত করা উচিত। এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে পারে। তৃতীয়ত, পরিবারগুলিকে বৃষ্টির জল সংগ্রহের জন্য পাত্র বিতরণ করা উচিত। এছাড়াও, নারীদের ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষিত করা এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।