ঢাকা ১২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র কুরআন শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 117

Credit:www.dailyvorerpata.com

পবিত্র কুরআন- ইসলাম ধর্মের মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ, শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, বরং এটি জীবন ব্যবস্থাপনার এক নিখুঁত নির্দেশিকা।

কুরআনের অবতরণ:
ধীরে ধীরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর প্রায় ২৩ বছর ধরে অবতীর্ণ হয়েছিল। প্রথম আয়াত মক্কায়, যখন নবীজি ৪০ বছর বয়সী ছিলেন। পরবর্তীতে মদিনায় হিজরতের পর বাকি আয়াতগুলো হয়।

কুরআনের সংকলন:
নবীজির জীবদ্দশায় সাহাবীরা আয়াতগুলো মুখস্থ করতেন এবং লিপিবদ্ধ করতেন। নবীজির মৃত্যুর পর সাহাবীরা বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করেন। তখন খলিফা আবু বকর সিদ্ধান্ত নেন, একটি সঠিক ও সম্পূর্ণ সংস্করণ তৈরি করা হবে। তিনি উম্মাতের বিশিষ্ট সাহাবীদের দিয়ে এই কাজটি করান। এই সংকলিত কুরআনকে মুসহাফ বলা হয়।

পর্যায়ক্রমে অবতরণ: আয়াতগুলো মহানবী  (সাঃ)-এর উপর প্রায় ২৩ বছর ধরে পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছে, প্রথম হিরা গুহায়, যখন তিনি তিব্বত পর্বতে ইবাদতরত ছিলেন।
সাহাবীদের স্মরণ: অবতীর্ণ হওয়া মাত্র মুহাম্মদ (সাঃ) সাহাবীদের সামনে পাঠ করতেন। সাহাবীরা এগুলো মুখস্থ করতেন এবং লিখে রাখতেন।
খেজুরের পাতা ও হাড়ে লেখা: প্রাথমিকভাবে খেজুরের পাতা, হাড় ইত্যাদিতে লিখিত হতো।
সংকলন: মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর সাহাবীরা সংকলনের কাজ শুরু করেন। খলিফা আবু বকর সিদ্দিকের আমলে ওমর ইবনে খাত্তাবের পরামর্শে এই কাজটি শুরু হয়। যুদ্ধে অনেক সাহাবী শহীদ হওয়ায় সংকলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল।
একটি গ্রন্থে সংকলন: উসমান ইবনে আফানের আমলে একটি গ্রন্থে সংকলন করে এবং এর একাধিক প্রতিলিপি তৈরি করে বিভিন্ন মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

বিশেষত্ব:
সর্বকালীন: কুরআন সর্বকালীন ও সর্বজনীন। এটি মানবজাতির জন্য সকল যুগে ও সকল স্থানে প্রযোজ্য।
বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্য: অনেক বিজ্ঞানসম্মত তথ্য রয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারের অনেক আগেই বর্ণিত হয়েছে।
আধ্যাত্মিক জ্ঞান: কুরআন মানুষকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে এবং জীবনের সঠিক পথ দেখায়।
ইলাহী বাণী: মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী,  আল্লাহ’র বাণী, যা মানুষের জন্য সর্বোত্তম নির্দেশনা।
সর্বকালীন: সকল যুগ ও সকল মানুষের জন্য প্রাসঙ্গিক। এর বাণী আজও সমানভাবে প্রযোজ্য।
অনুবাদ:  মূল ভাষা আরবি। অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে, তবে ভাষার সৌন্দর্য ও গভীরতা সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হয় না।
অনুপ্রেরণা: মুসলমানদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। এটি তাদেরকে ন্যায়, সত্য, দয়া, ক্ষমা এবং ভালো কাজের দিকে উৎসাহিত করে।

গুরুত্ব:
মুসলমানদের জন্য হলো জীবনের সর্বোচ্চ নির্দেশিকা। এটি তাদেরকে ইবাদত, আচার-আচরণ, সামাজিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, রাজনীতি সহ সকল ক্ষেত্রে , আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে। ইসলাম ধর্মের মূল গ্রন্থ।  যা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাধ্যমে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিল। মানুষকে জীবনের সঠিক পথ দেখায় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পবিত্র কুরআন শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।

আপডেট সময় : ১০:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পবিত্র কুরআন- ইসলাম ধর্মের মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ, শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, বরং এটি জীবন ব্যবস্থাপনার এক নিখুঁত নির্দেশিকা।

কুরআনের অবতরণ:
ধীরে ধীরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর প্রায় ২৩ বছর ধরে অবতীর্ণ হয়েছিল। প্রথম আয়াত মক্কায়, যখন নবীজি ৪০ বছর বয়সী ছিলেন। পরবর্তীতে মদিনায় হিজরতের পর বাকি আয়াতগুলো হয়।

কুরআনের সংকলন:
নবীজির জীবদ্দশায় সাহাবীরা আয়াতগুলো মুখস্থ করতেন এবং লিপিবদ্ধ করতেন। নবীজির মৃত্যুর পর সাহাবীরা বিভিন্ন সংস্করণ তৈরি করেন। তখন খলিফা আবু বকর সিদ্ধান্ত নেন, একটি সঠিক ও সম্পূর্ণ সংস্করণ তৈরি করা হবে। তিনি উম্মাতের বিশিষ্ট সাহাবীদের দিয়ে এই কাজটি করান। এই সংকলিত কুরআনকে মুসহাফ বলা হয়।

পর্যায়ক্রমে অবতরণ: আয়াতগুলো মহানবী  (সাঃ)-এর উপর প্রায় ২৩ বছর ধরে পর্যায়ক্রমে অবতীর্ণ হয়েছে, প্রথম হিরা গুহায়, যখন তিনি তিব্বত পর্বতে ইবাদতরত ছিলেন।
সাহাবীদের স্মরণ: অবতীর্ণ হওয়া মাত্র মুহাম্মদ (সাঃ) সাহাবীদের সামনে পাঠ করতেন। সাহাবীরা এগুলো মুখস্থ করতেন এবং লিখে রাখতেন।
খেজুরের পাতা ও হাড়ে লেখা: প্রাথমিকভাবে খেজুরের পাতা, হাড় ইত্যাদিতে লিখিত হতো।
সংকলন: মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর সাহাবীরা সংকলনের কাজ শুরু করেন। খলিফা আবু বকর সিদ্দিকের আমলে ওমর ইবনে খাত্তাবের পরামর্শে এই কাজটি শুরু হয়। যুদ্ধে অনেক সাহাবী শহীদ হওয়ায় সংকলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল।
একটি গ্রন্থে সংকলন: উসমান ইবনে আফানের আমলে একটি গ্রন্থে সংকলন করে এবং এর একাধিক প্রতিলিপি তৈরি করে বিভিন্ন মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

বিশেষত্ব:
সর্বকালীন: কুরআন সর্বকালীন ও সর্বজনীন। এটি মানবজাতির জন্য সকল যুগে ও সকল স্থানে প্রযোজ্য।
বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্য: অনেক বিজ্ঞানসম্মত তথ্য রয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারের অনেক আগেই বর্ণিত হয়েছে।
আধ্যাত্মিক জ্ঞান: কুরআন মানুষকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে এবং জীবনের সঠিক পথ দেখায়।
ইলাহী বাণী: মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী,  আল্লাহ’র বাণী, যা মানুষের জন্য সর্বোত্তম নির্দেশনা।
সর্বকালীন: সকল যুগ ও সকল মানুষের জন্য প্রাসঙ্গিক। এর বাণী আজও সমানভাবে প্রযোজ্য।
অনুবাদ:  মূল ভাষা আরবি। অনেক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে, তবে ভাষার সৌন্দর্য ও গভীরতা সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হয় না।
অনুপ্রেরণা: মুসলমানদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। এটি তাদেরকে ন্যায়, সত্য, দয়া, ক্ষমা এবং ভালো কাজের দিকে উৎসাহিত করে।

গুরুত্ব:
মুসলমানদের জন্য হলো জীবনের সর্বোচ্চ নির্দেশিকা। এটি তাদেরকে ইবাদত, আচার-আচরণ, সামাজিক সম্পর্ক, অর্থনীতি, রাজনীতি সহ সকল ক্ষেত্রে , আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে। ইসলাম ধর্মের মূল গ্রন্থ।  যা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাধ্যমে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছিল। মানুষকে জীবনের সঠিক পথ দেখায় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করে।