ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৯:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪ ৪৯৫ বার পড়া হয়েছে

কান্তনগর মন্দির/ফটো ক্রেডিট: Badal Chandra Sarker

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুর জেলার অবস্থান বাংলাদেশের উত্তর অংশটি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাশেই একটি প্রাচীন জেলা,যেখানে এর সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য রয়েছে।

দিনাজপুর জেলার ভূমিকা:

দিনাজপুরের প্রশাসনিক ইউনিট রংপুর বিভাগের অন্তর্গত। আয়তন ৩৪৩৭.৯৮ বর্গকিলোমিটার। দিনাজপুর জেলা ৩৪৩৭.৯৮ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় এর পূর্বাঞ্চল দখল করে আছে, জয়পুরহাট এবং গাইবান্ধা পশ্চিমাঞ্চলে এবং কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে দক্ষিণ সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে।

দিনাজপুর জেলা প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ:

দিনাজপুর জেলা ১৭৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। লোককাহিনী অনুসারে, দিনাজ বা দিনাজ রাজকীয় দিনাজপুর পরিবারের প্রথম সদস্য ছিলেন। রাজবাড়ি বা রাজবাটি নামে পরিচিত এই অভয়ারণ্যটিতে একখণ্ড জমি রয়েছে যা স্থানীয় নামকরণের জন্য দিনাজপুর থেকে নামকরণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসকরা ঘোড়াঘাট সরকারকে অবসান করে একটি নতুন জেলা প্রতিষ্ঠা করেন যার নামকরণ করা হয় তৎকালীন রাজার নামে।

দিনাজপুর জেলায় ১৩টি উপজেলা এবং ৯টি পৌরসভা রয়েছে।

  • দিনাজপুর সদর,বিরামপুর ,খানসামা, বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ, ফুলবাড়ি,
  • চিরিরবন্দর, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, কাহারোল,
  • নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর বিরোল।
দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
নয়াবাদ মসজিদ/ফটো ক্রেডিট: Nasir Khan Saikat

দিনাজপুর জেলার ইতিহাস:

ইতিহাস প্রমাণ করে যে দিনাজপুর জেলা সুদূর অতীতে বিস্তৃত ছিল। প্রাচীনকালে এই অঞ্চল বৌদ্ধ ও হিন্দু উভয় সাম্রাজ্যেরই ছিল। মুসলিম শাসনামলে এই জেলার ব্যাপক গুরুত্ব ছিল।

দিনাজপুর জেলার প্রাচীন সময়:

দিনাজপুরের প্রাচীন সম্প্রদায় বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্মের একটি প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে তার মর্যাদা বজায় রেখেছিল। বিভিন্ন প্রাচীন মন্দির এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা এই স্থানে তাদের উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

মধ্যযুগীয় সময়: মধ্যযুগে ইসলাম দিনাজপুরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। মসজিদ এবং অন্যান্য ভবন নির্মাণের প্রকল্পগুলি এই নির্দিষ্ট সময়েই হয়েছিল।

আধুনিক সময়: বর্তমান সময়কালে দিনাজপুরকে একটি জেলা হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছিল। বর্তমানে এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অংশ হিসেবে কাজ করে।

আরও জানুন- যশোর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

দিনাজপুরের ভাষা আন্দোলন:

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম উপাদান দিনাজপুর ভাষা আন্দোলন। ভাষা রক্ষার জন্য বাসিন্দারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।দিনাজপুর জেলা বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এই জেলা তার ঐতিহাসিক পটভূমি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, পর্যটন আকর্ষণ এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করে। দিনাজপুর অঞ্চলে বিদ্যমান বিভিন্ন রূপ আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

দিনাজপুর জেলার সংস্কৃতি:

দিনাজপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে একাধিক সমৃদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি। স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন ধরণের উৎসবের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পালন করে। উৎসব: পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূজা, ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা ।

দিনাজপুর জেলার খাবার:

দিনাজপুরকে মানুষ তার স্বতন্ত্র রন্ধনপ্রণালীর জন্য চেনে। দিনাজপুরের মানুষ ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন কাচ্চি বিরিয়ানি এবং মাটন কাবাব এবং মিষ্টি দই খেতে পছন্দ করে। কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন কাবাব, মিষ্টি দই ।

ভিডিও ক্রেডিট: পথে প্রান্তরে ৩৬৫

 

দিনাজপুরের পর্যটন স্থান

দর্শনার্থীদের জন্য দিনাজপুর জেলায় বেশ কয়েকটি বিখ্যাত স্থান রয়েছে। নিম্নলিখিত তালিকায় দিনাজপুরের মধ্যে সর্বাধিক পরিদর্শন করা স্থানগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

পর্যটন স্থানের বর্ণনা:

হিন্দু উপাসনার একটি জনপ্রিয় মন্দির কান্তজির মন্দির হিসাবে বিদ্যমান। প্রাচীন স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা এই কাঠামোটিকে তার সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব বলে মনে করেন। দর্শনার্থীরা এই স্থানে বিশাল রামসাগর দিঘি জলাধার খুঁজে পেতে পারেন। এই স্থানটির জনপ্রিয়তার কারণে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে আকর্ষণ করে।

ইতিহাস অনুসারে, নয়াবাজার একটি প্রাচীন বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই স্থানে নয়াবাজারকে এর প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দিনাজপুরে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এখানে কিছু জনপ্রিয় পর্যটন স্থান উল্লেখ করা হলো:

পর্যটন স্থান বর্ণনা
কান্তজির মন্দির কান্তজির মন্দির একটি বিখ্যাত হিন্দু মন্দির। এটি প্রাচীন স্থাপত্যের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
রামসাগর দীঘি রামসাগর দীঘি একটি বিশাল জলাধার। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।
নয়াবাজার নয়াবাজার একটি প্রাচীন বাজার। এটি এখানকার অর্থনৈতিক কেন্দ্র।

 

দিনাজপুরের রাজনীতিবিদ 

হাজী মোহাম্মদ দানেশ, (২৭ জুন ১৯০০ – ২৮ জুন ১৯৮৬) অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের কৃষক নেতা।
খালেদা জিয়া, (জন্ম: আগস্ট ১৫, ১৯৪৫), বাংলাদেশের সাবেক ও প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী;
প্রেমহরি বর্মন, (? -১৯৭২) দিনাজপুর জেলা তফশিলী সম্প্রদায়ের নেতা, ব্রিটিশ ভারতের এমপি ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রী;
অধ্যাপক ইউসুফ আলী, ( ১৯২৩ – ১৯৯৯) স্বাধীনতার সনদ পাঠক, মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী;
এম আব্দুর রহিম, (২১ নভেম্বর ১৯২৭ – ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬) স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সংবিধান রচনাকারী ও সাবেক সংসদ সদস্য;
মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটির সদস্য;
মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (২৯ নভেম্বর ১৯৫৩) বাংলাদেশের দিনাজপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য।

মনোরঞ্জন শীল গোপাল (১ জানুয়ারি ১৯৬৪) বাংলাদেশের দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য।
ইকবালুর রহিম (জন্ম ১৬ আগস্ট ১৯৬৫) বাংলাদেশের দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ

বিচারপতি এ. টি. এম. আফজাল (জন্ম: ১ জুন ১৯৩৪) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ৮ ম প্রধান বিচারপতি।
ডা. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন (৫ এপ্রিল, ১৯৫৪- বর্তমান) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত সমাজ সেবক ও দেশসেরা অর্থোপেডিক চিকিৎসক।

শহীদ ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান, (বীর উত্তম),(জন্ম: অজানা – মৃত্যু: ১৯৭১), ১৯৭১-এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা;
এ,এল,এম ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক।

ক্রিয়া ও সাংষ্কৃতিক ব্যক্তি

আব্দুল বারী, (১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩০- ৪ঠা জুন, ২০০৩) বাংলাদেশের দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশী লেখক ও শিক্ষাবিদ,

জাম্বু: বাংলাদেশী অভিনেতা।
সুভাষ দত্ত, (৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩০ – ১৬ নভেম্বর, ২০১২), বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পী, নির্মাতা ও অভিনেতা;
আব্দুল বারী, (১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩০- ৪ঠা জুন, ২০০৩) বাংলাদেশের দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশী লেখক ও শিক্ষাবিদ,

নিতুন কুন্ডু, (৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ – ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৬), বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী;

ধীমান ঘোষ, (জন্ম: ২৩ নভেম্বর ১৯৮৭) বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
লিটন দাস, (জন্ম: ১৩ অক্টোবর, ১৯৯৪) বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
নবীন ইসলাম (জন্ম ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৬) একজন বাংলাদেশী প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার।

নাজিব তারেক(জন্ম: সেপ্টেম্বর ৫, ১৯৭০) একজন বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী,   (তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)

দিনাজপুরের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান:

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জরিপ অনুযায়ী ৫১৪০টি মসজিদ এবং ২২২টি মন্দির রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় দিনাজপুরের গোরে-শাহ ঈদগাহ ময়দানে। বর্তমানে এটি দিনাজপুর ঈদগাহ ময়দান নামে সারা দেশে আলোচিত। এখানে একসাথে ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি একসাথে সালাত আদায় করে। এছাড়াও এখানে নিম্নোক্ত বিখ্যাত ধর্মালয় বিদ্যমান-সুরা মসজিদ,কান্তজীর মন্দির,নয়াবাদ মসজিদ,চেহেলগাজী মাজার,কুড়িয়াল মাজার আমবাড়ী,আওকরা মসজিদ।

 

দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়/ফটো ক্রেডিট: Sowmittraw roy

দিনাজপুর জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

দিনাজপুরের শিক্ষার মান ৫৬.৯৬%। দিনাজপুর জেলায় ১টি বিশ্ববিদ্যালয় “হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়”, ১টি ভেটেরিনারি কলেজ, ১টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ১টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, ১১৮টি কলেজ, ৬১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি বৃত্তিমূলক ও অন্যান্য কেন্দ্র, ৩৫১টি মাদ্রাসা, ১০টি কিন্ডারগার্টেন, ২৯টি এনজিও স্কুল, ১১টি কমিউনিটি স্কুল এবং ১৭১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

দিনাজপুরের জনসংখ্যা পরিসংখ্যান:

দিনাজপুর জেলায় বসবাসকারী মোট জনসংখ্যা ৩,৩১৫,২৩৮ জন। দিনাজপুর জেলার জনসংখ্যা পরিসংখ্যান অনুসারে মোট ১৬,৬০,৯৯৭ জন পুরুষ এবং ১৬,৫৪,২৪১ জন মহিলা। দিনাজপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ২০,৫৭,০৩০ জন মুসলিম, ৫,২১,৯২৫ জন হিন্দু, ২৭,৯৯৬ জন খ্রিস্টান, ১,০৯৩ জন বৌদ্ধ এবং ৩৪,৮০৬ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

দিনাজপুর জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ০.৯৮ শতাংশ। জনসংখ্যার হিসাব অনুযায়ী, ১:১.০২ অনুপাতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা ১% বেশি। সাঁওতাল ও ওরাওঁ, মাহলি, মালপাহাড়ি ও কো সম্প্রদায়ের মানুষ দিনাজপুর জেলায় বাস করে।

আরও জানুন-গাইবান্ধা জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

দিনাজপুরের আবহাওয়া এবং জলবায়ু:

দিনাজপুরের জলবায়ু গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র তাপমাত্রা এবং উষ্ণ আবহাওয়া দ্বারা গঠিত। মৌসুমি বায়ু এই অঞ্চলের পরিবেশগত অবস্থার উপর তীব্র প্রভাব ফেলে। দিনাজপুর শীতকাল ঠান্ডা থাকার জন্য বিখ্যাত, তবে গ্রীষ্মের তাপের মাত্রা বিশেষভাবে তীব্র হয়।

দিনাজপুরে বছরে গড়ে ২৫° সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। দিনাজপুরের তাপমাত্রা জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন ১৮° সেলসিয়াস এবং আগস্ট মাসে সর্বোচ্চ ২৯° সেলসিয়াসে পৌঁছায়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২,৫৩৬ মিমি।

দিনাজপুরের নদী:
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল যেখানে দিনাজপুর অবস্থিত, সেখানে অসংখ্য জলসম্পদ রয়েছে, কারণ এটি উত্তরে অবস্থিত। কৃষিকাজের জন্য দিনাজপুরের মোহনপুরে আত্রাই নদীর তীরে আরুব্বর বাঁধ নির্মিত হয়েছিল।

আত্রাই নদী, কাঁকদা নদী, কাঁচমতি নদী, করতোয়া নদী, ইছামতি নদী, খড়খরিয়া নদী, ছোট যমুনা নদী, টাঙ্গন নদী, ঢেপা নদী, পুনর্ভবা নদী, যমুনেশ্বরী নদী, আখিরা-মাচ্চা নদী, নিম্ন করতোয়া নদী, কালা নদী, গোবেশ্বরী নদী, ঝিরনাই নদী, চিড়িয়া নদী, নগড় নদী, নগদ নদী। পাথরঘাটা নদী, বেলান নদী, ভুলি নদী, মাইলা নদী, রাক্ষসিনী-তেঁতালিয়া নদী, তুলসীগঙ্গা নদী, হরবতী নদী, ঢেপা নদী।

দিনাজপুরের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য:
দিনাজপুর জাদুঘরে বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষিত আছে যা পূর্বে দিনাজপুর মহারাজার ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে স্থান পেয়েছে। অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি হল-
দিনাজপুর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে অরুণ ধাপ, বার পাইকের গড়, ঘোড়াঘাট দুর্গ, প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির, কাহারোল, কালিয়া জি মন্দির, রামসাগর এবং মোহনপুর রাবার ড্রাম।

রামসাগর নামে পরিচিত নির্মিত পুকুরটি দিনাজপুর জেলার তাজপুর গ্রামে অবস্থিত। রামসাগরের মাধ্যমে বাংলাদেশ বৃহত্তম মানবসৃষ্ট কৃত্রিম পুকুরের খেতাব ধারণ করে।

দিনাজপুরের লোকসংস্কৃতি:

দিনাজপুরের লোকসংগীতগুলির প্রধান ধারাগুলি হল ভাওয়াইয়া, কীর্তন, পাঁচালি, মেয়েলী গীত, গোরখনাথের গান, চরকের গান এবং প্রবাদ-প্রবচন ও ছন্দ এবং চিল্কা, হেয়ালি, ধাধা এবং জারিগান সহ বাউল গান।

আরও বিভিন্ন জেলার সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন …

দিনাজপুর খেলাধুলা:

দিনাজপুর জেলার মানুষ ক্রিকেট খেলার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ দেখায়। মূল এলাকায় অবস্থিত একটি স্টেডিয়াম দিনাজপুর স্টেডিয়াম নামে অসংখ্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেটার লিটন দাস দিনাজপুর থেকে এসেছেন। স্থানীয় খেলায় চারটি আঞ্চলিক প্রিয় খেলা রয়েছে যা হল হা-ডু-ডু, গোল্লাচুট, ​​বউ চি এবং লুকোচুরি।

দিনাজপুরের কৃষি:

দিনাজপুরের এলাকা লিচু চাষের জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে। দিনাজপুর জেলার প্রধান কৃষি পণ্য হল লিচু, অন্যদিকে চাল এর প্রধান রপ্তানি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাটারিভোগের পাশাপাশি দিনাজপুর জেলা থেকে আসা কালিজিরা চালের মূল্য বেশি। দিনাজপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণে গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন ও টমেটো উৎপাদিত হয়। জেলায় পাঁচ ধরণের ফল চাষ করা হয় যার মধ্যে রয়েছে কাঁঠাল, লিচু, আম, কলা এবং জাম। দিনাজপুর জেলার আম ও লিচু তাদের পণ্যের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

দিনাজপুরের শিল্প ও বাণিজ্য:

প্রধান কৃষি খাত দিনাজপুর জেলার বেশিরভাগ শিল্প উন্নয়নকে কৃষি-সম্পর্কিত করে তোলে। দিনাজপুর জেলার প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেড এবং দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড অন্যতম। দিনাজপুরের প্রধান কৃষিপণ্য হল চাল, যার ফলে জেলায় ১০০টিরও বেশি স্বয়ংক্রিয় এবং আধা-স্বয়ংক্রিয় চালকল এবং বিভিন্ন চাতাল-ভিত্তিক চালকল পরিচালিত হয়। জেলাটি বিড়লায় অবস্থিত একটি পাট উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা করে।

 

F A Q

দিনাজপুর জেলা বাংলাদেশের কোথায় অবস্থিত?

বাংলাদেশের একটি অপরিহার্য জেলা হিসেবে দিনাজপুর তার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত।

দিনাজপুরে ভ্রমণকারী পর্যটকদের তিনটি প্রধান স্থানগুলো কি কি ?

দিনাজপুরের তিনটি প্রধান দর্শনীয় স্থান পর্যটকদের কান্তজী মন্দির, রামসাগর দিঘি এবং সিংড়া বনের প্রতি আকৃষ্ট করে।

কোন সময়ে দিনাজপুর তার সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে অস্তিত্বে স্বাগত জানায়?

মুনির চৌধুরী দিনাজপুর শহরে তার জন্মস্থান স্থাপন করেন।

দিনাজপুর জুড়ে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি বিদ্যমান কি?

দিনাজপুরের তিনটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে কান্তজী মন্দির, রামসাগর দিঘি এবং দিনাজপুর রাজবাড়ি।

দিনাজপুরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম আছে?

দিনাজপুরে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনোযোগ আকর্ষণ করে তার মধ্যে রয়েছে দিনাজপুর সরকারি কলেজ এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

আপডেট সময় : ০৯:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

দিনাজপুর জেলার অবস্থান বাংলাদেশের উত্তর অংশটি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাশেই একটি প্রাচীন জেলা,যেখানে এর সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মূল্য রয়েছে।

দিনাজপুর জেলার ভূমিকা:

দিনাজপুরের প্রশাসনিক ইউনিট রংপুর বিভাগের অন্তর্গত। আয়তন ৩৪৩৭.৯৮ বর্গকিলোমিটার। দিনাজপুর জেলা ৩৪৩৭.৯৮ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় এর পূর্বাঞ্চল দখল করে আছে, জয়পুরহাট এবং গাইবান্ধা পশ্চিমাঞ্চলে এবং কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে দক্ষিণ সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে।

দিনাজপুর জেলা প্রতিষ্ঠা ও নামকরণ:

দিনাজপুর জেলা ১৭৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। লোককাহিনী অনুসারে, দিনাজ বা দিনাজ রাজকীয় দিনাজপুর পরিবারের প্রথম সদস্য ছিলেন। রাজবাড়ি বা রাজবাটি নামে পরিচিত এই অভয়ারণ্যটিতে একখণ্ড জমি রয়েছে যা স্থানীয় নামকরণের জন্য দিনাজপুর থেকে নামকরণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসকরা ঘোড়াঘাট সরকারকে অবসান করে একটি নতুন জেলা প্রতিষ্ঠা করেন যার নামকরণ করা হয় তৎকালীন রাজার নামে।

দিনাজপুর জেলায় ১৩টি উপজেলা এবং ৯টি পৌরসভা রয়েছে।

  • দিনাজপুর সদর,বিরামপুর ,খানসামা, বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ, ফুলবাড়ি,
  • চিরিরবন্দর, ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, কাহারোল,
  • নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর বিরোল।
দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
নয়াবাদ মসজিদ/ফটো ক্রেডিট: Nasir Khan Saikat

দিনাজপুর জেলার ইতিহাস:

ইতিহাস প্রমাণ করে যে দিনাজপুর জেলা সুদূর অতীতে বিস্তৃত ছিল। প্রাচীনকালে এই অঞ্চল বৌদ্ধ ও হিন্দু উভয় সাম্রাজ্যেরই ছিল। মুসলিম শাসনামলে এই জেলার ব্যাপক গুরুত্ব ছিল।

দিনাজপুর জেলার প্রাচীন সময়:

দিনাজপুরের প্রাচীন সম্প্রদায় বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্মের একটি প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে তার মর্যাদা বজায় রেখেছিল। বিভিন্ন প্রাচীন মন্দির এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা এই স্থানে তাদের উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

মধ্যযুগীয় সময়: মধ্যযুগে ইসলাম দিনাজপুরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। মসজিদ এবং অন্যান্য ভবন নির্মাণের প্রকল্পগুলি এই নির্দিষ্ট সময়েই হয়েছিল।

আধুনিক সময়: বর্তমান সময়কালে দিনাজপুরকে একটি জেলা হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছিল। বর্তমানে এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অংশ হিসেবে কাজ করে।

আরও জানুন- যশোর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

দিনাজপুরের ভাষা আন্দোলন:

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম উপাদান দিনাজপুর ভাষা আন্দোলন। ভাষা রক্ষার জন্য বাসিন্দারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।দিনাজপুর জেলা বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এই জেলা তার ঐতিহাসিক পটভূমি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, পর্যটন আকর্ষণ এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে আমাদের গর্বিত করে। দিনাজপুর অঞ্চলে বিদ্যমান বিভিন্ন রূপ আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

দিনাজপুর জেলার সংস্কৃতি:

দিনাজপুরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে একাধিক সমৃদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি। স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন ধরণের উৎসবের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পালন করে। উৎসব: পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূজা, ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহা ।

দিনাজপুর জেলার খাবার:

দিনাজপুরকে মানুষ তার স্বতন্ত্র রন্ধনপ্রণালীর জন্য চেনে। দিনাজপুরের মানুষ ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন কাচ্চি বিরিয়ানি এবং মাটন কাবাব এবং মিষ্টি দই খেতে পছন্দ করে। কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন কাবাব, মিষ্টি দই ।

ভিডিও ক্রেডিট: পথে প্রান্তরে ৩৬৫

 

দিনাজপুরের পর্যটন স্থান

দর্শনার্থীদের জন্য দিনাজপুর জেলায় বেশ কয়েকটি বিখ্যাত স্থান রয়েছে। নিম্নলিখিত তালিকায় দিনাজপুরের মধ্যে সর্বাধিক পরিদর্শন করা স্থানগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:

পর্যটন স্থানের বর্ণনা:

হিন্দু উপাসনার একটি জনপ্রিয় মন্দির কান্তজির মন্দির হিসাবে বিদ্যমান। প্রাচীন স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা এই কাঠামোটিকে তার সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব বলে মনে করেন। দর্শনার্থীরা এই স্থানে বিশাল রামসাগর দিঘি জলাধার খুঁজে পেতে পারেন। এই স্থানটির জনপ্রিয়তার কারণে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে আকর্ষণ করে।

ইতিহাস অনুসারে, নয়াবাজার একটি প্রাচীন বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই স্থানে নয়াবাজারকে এর প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দিনাজপুরে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এখানে কিছু জনপ্রিয় পর্যটন স্থান উল্লেখ করা হলো:

পর্যটন স্থান বর্ণনা
কান্তজির মন্দির কান্তজির মন্দির একটি বিখ্যাত হিন্দু মন্দির। এটি প্রাচীন স্থাপত্যের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
রামসাগর দীঘি রামসাগর দীঘি একটি বিশাল জলাধার। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।
নয়াবাজার নয়াবাজার একটি প্রাচীন বাজার। এটি এখানকার অর্থনৈতিক কেন্দ্র।

 

দিনাজপুরের রাজনীতিবিদ 

হাজী মোহাম্মদ দানেশ, (২৭ জুন ১৯০০ – ২৮ জুন ১৯৮৬) অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের কৃষক নেতা।
খালেদা জিয়া, (জন্ম: আগস্ট ১৫, ১৯৪৫), বাংলাদেশের সাবেক ও প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী;
প্রেমহরি বর্মন, (? -১৯৭২) দিনাজপুর জেলা তফশিলী সম্প্রদায়ের নেতা, ব্রিটিশ ভারতের এমপি ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রী;
অধ্যাপক ইউসুফ আলী, ( ১৯২৩ – ১৯৯৯) স্বাধীনতার সনদ পাঠক, মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী;
এম আব্দুর রহিম, (২১ নভেম্বর ১৯২৭ – ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬) স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সংবিধান রচনাকারী ও সাবেক সংসদ সদস্য;
মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটির সদস্য;
মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (২৯ নভেম্বর ১৯৫৩) বাংলাদেশের দিনাজপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য।

মনোরঞ্জন শীল গোপাল (১ জানুয়ারি ১৯৬৪) বাংলাদেশের দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য।
ইকবালুর রহিম (জন্ম ১৬ আগস্ট ১৯৬৫) বাংলাদেশের দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ

বিচারপতি এ. টি. এম. আফজাল (জন্ম: ১ জুন ১৯৩৪) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ৮ ম প্রধান বিচারপতি।
ডা. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন (৫ এপ্রিল, ১৯৫৪- বর্তমান) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত সমাজ সেবক ও দেশসেরা অর্থোপেডিক চিকিৎসক।

শহীদ ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান, (বীর উত্তম),(জন্ম: অজানা – মৃত্যু: ১৯৭১), ১৯৭১-এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা;
এ,এল,এম ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের সাবেক মহাপরিচালক।

ক্রিয়া ও সাংষ্কৃতিক ব্যক্তি

আব্দুল বারী, (১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩০- ৪ঠা জুন, ২০০৩) বাংলাদেশের দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশী লেখক ও শিক্ষাবিদ,

জাম্বু: বাংলাদেশী অভিনেতা।
সুভাষ দত্ত, (৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩০ – ১৬ নভেম্বর, ২০১২), বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পী, নির্মাতা ও অভিনেতা;
আব্দুল বারী, (১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩০- ৪ঠা জুন, ২০০৩) বাংলাদেশের দিনাজপুরে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশী লেখক ও শিক্ষাবিদ,

নিতুন কুন্ডু, (৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ – ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৬), বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী;

ধীমান ঘোষ, (জন্ম: ২৩ নভেম্বর ১৯৮৭) বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
লিটন দাস, (জন্ম: ১৩ অক্টোবর, ১৯৯৪) বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
নবীন ইসলাম (জন্ম ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৬) একজন বাংলাদেশী প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার।

নাজিব তারেক(জন্ম: সেপ্টেম্বর ৫, ১৯৭০) একজন বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী,   (তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)

দিনাজপুরের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান:

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জরিপ অনুযায়ী ৫১৪০টি মসজিদ এবং ২২২টি মন্দির রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় দিনাজপুরের গোরে-শাহ ঈদগাহ ময়দানে। বর্তমানে এটি দিনাজপুর ঈদগাহ ময়দান নামে সারা দেশে আলোচিত। এখানে একসাথে ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি একসাথে সালাত আদায় করে। এছাড়াও এখানে নিম্নোক্ত বিখ্যাত ধর্মালয় বিদ্যমান-সুরা মসজিদ,কান্তজীর মন্দির,নয়াবাদ মসজিদ,চেহেলগাজী মাজার,কুড়িয়াল মাজার আমবাড়ী,আওকরা মসজিদ।

 

দিনাজপুর জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়/ফটো ক্রেডিট: Sowmittraw roy

দিনাজপুর জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

দিনাজপুরের শিক্ষার মান ৫৬.৯৬%। দিনাজপুর জেলায় ১টি বিশ্ববিদ্যালয় “হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়”, ১টি ভেটেরিনারি কলেজ, ১টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ১টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, ১১৮টি কলেজ, ৬১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি বৃত্তিমূলক ও অন্যান্য কেন্দ্র, ৩৫১টি মাদ্রাসা, ১০টি কিন্ডারগার্টেন, ২৯টি এনজিও স্কুল, ১১টি কমিউনিটি স্কুল এবং ১৭১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

দিনাজপুরের জনসংখ্যা পরিসংখ্যান:

দিনাজপুর জেলায় বসবাসকারী মোট জনসংখ্যা ৩,৩১৫,২৩৮ জন। দিনাজপুর জেলার জনসংখ্যা পরিসংখ্যান অনুসারে মোট ১৬,৬০,৯৯৭ জন পুরুষ এবং ১৬,৫৪,২৪১ জন মহিলা। দিনাজপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ২০,৫৭,০৩০ জন মুসলিম, ৫,২১,৯২৫ জন হিন্দু, ২৭,৯৯৬ জন খ্রিস্টান, ১,০৯৩ জন বৌদ্ধ এবং ৩৪,৮০৬ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

দিনাজপুর জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ০.৯৮ শতাংশ। জনসংখ্যার হিসাব অনুযায়ী, ১:১.০২ অনুপাতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা ১% বেশি। সাঁওতাল ও ওরাওঁ, মাহলি, মালপাহাড়ি ও কো সম্প্রদায়ের মানুষ দিনাজপুর জেলায় বাস করে।

আরও জানুন-গাইবান্ধা জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

দিনাজপুরের আবহাওয়া এবং জলবায়ু:

দিনাজপুরের জলবায়ু গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র তাপমাত্রা এবং উষ্ণ আবহাওয়া দ্বারা গঠিত। মৌসুমি বায়ু এই অঞ্চলের পরিবেশগত অবস্থার উপর তীব্র প্রভাব ফেলে। দিনাজপুর শীতকাল ঠান্ডা থাকার জন্য বিখ্যাত, তবে গ্রীষ্মের তাপের মাত্রা বিশেষভাবে তীব্র হয়।

দিনাজপুরে বছরে গড়ে ২৫° সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। দিনাজপুরের তাপমাত্রা জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন ১৮° সেলসিয়াস এবং আগস্ট মাসে সর্বোচ্চ ২৯° সেলসিয়াসে পৌঁছায়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২,৫৩৬ মিমি।

দিনাজপুরের নদী:
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল যেখানে দিনাজপুর অবস্থিত, সেখানে অসংখ্য জলসম্পদ রয়েছে, কারণ এটি উত্তরে অবস্থিত। কৃষিকাজের জন্য দিনাজপুরের মোহনপুরে আত্রাই নদীর তীরে আরুব্বর বাঁধ নির্মিত হয়েছিল।

আত্রাই নদী, কাঁকদা নদী, কাঁচমতি নদী, করতোয়া নদী, ইছামতি নদী, খড়খরিয়া নদী, ছোট যমুনা নদী, টাঙ্গন নদী, ঢেপা নদী, পুনর্ভবা নদী, যমুনেশ্বরী নদী, আখিরা-মাচ্চা নদী, নিম্ন করতোয়া নদী, কালা নদী, গোবেশ্বরী নদী, ঝিরনাই নদী, চিড়িয়া নদী, নগড় নদী, নগদ নদী। পাথরঘাটা নদী, বেলান নদী, ভুলি নদী, মাইলা নদী, রাক্ষসিনী-তেঁতালিয়া নদী, তুলসীগঙ্গা নদী, হরবতী নদী, ঢেপা নদী।

দিনাজপুরের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য:
দিনাজপুর জাদুঘরে বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষিত আছে যা পূর্বে দিনাজপুর মহারাজার ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে স্থান পেয়েছে। অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি হল-
দিনাজপুর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে অরুণ ধাপ, বার পাইকের গড়, ঘোড়াঘাট দুর্গ, প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির, কাহারোল, কালিয়া জি মন্দির, রামসাগর এবং মোহনপুর রাবার ড্রাম।

রামসাগর নামে পরিচিত নির্মিত পুকুরটি দিনাজপুর জেলার তাজপুর গ্রামে অবস্থিত। রামসাগরের মাধ্যমে বাংলাদেশ বৃহত্তম মানবসৃষ্ট কৃত্রিম পুকুরের খেতাব ধারণ করে।

দিনাজপুরের লোকসংস্কৃতি:

দিনাজপুরের লোকসংগীতগুলির প্রধান ধারাগুলি হল ভাওয়াইয়া, কীর্তন, পাঁচালি, মেয়েলী গীত, গোরখনাথের গান, চরকের গান এবং প্রবাদ-প্রবচন ও ছন্দ এবং চিল্কা, হেয়ালি, ধাধা এবং জারিগান সহ বাউল গান।

আরও বিভিন্ন জেলার সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন …

দিনাজপুর খেলাধুলা:

দিনাজপুর জেলার মানুষ ক্রিকেট খেলার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ দেখায়। মূল এলাকায় অবস্থিত একটি স্টেডিয়াম দিনাজপুর স্টেডিয়াম নামে অসংখ্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেটার লিটন দাস দিনাজপুর থেকে এসেছেন। স্থানীয় খেলায় চারটি আঞ্চলিক প্রিয় খেলা রয়েছে যা হল হা-ডু-ডু, গোল্লাচুট, ​​বউ চি এবং লুকোচুরি।

দিনাজপুরের কৃষি:

দিনাজপুরের এলাকা লিচু চাষের জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে। দিনাজপুর জেলার প্রধান কৃষি পণ্য হল লিচু, অন্যদিকে চাল এর প্রধান রপ্তানি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাটারিভোগের পাশাপাশি দিনাজপুর জেলা থেকে আসা কালিজিরা চালের মূল্য বেশি। দিনাজপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণে গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন ও টমেটো উৎপাদিত হয়। জেলায় পাঁচ ধরণের ফল চাষ করা হয় যার মধ্যে রয়েছে কাঁঠাল, লিচু, আম, কলা এবং জাম। দিনাজপুর জেলার আম ও লিচু তাদের পণ্যের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

দিনাজপুরের শিল্প ও বাণিজ্য:

প্রধান কৃষি খাত দিনাজপুর জেলার বেশিরভাগ শিল্প উন্নয়নকে কৃষি-সম্পর্কিত করে তোলে। দিনাজপুর জেলার প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে সেতাবগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেড এবং দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড অন্যতম। দিনাজপুরের প্রধান কৃষিপণ্য হল চাল, যার ফলে জেলায় ১০০টিরও বেশি স্বয়ংক্রিয় এবং আধা-স্বয়ংক্রিয় চালকল এবং বিভিন্ন চাতাল-ভিত্তিক চালকল পরিচালিত হয়। জেলাটি বিড়লায় অবস্থিত একটি পাট উৎপাদন কেন্দ্র পরিচালনা করে।

 

F A Q

দিনাজপুর জেলা বাংলাদেশের কোথায় অবস্থিত?

বাংলাদেশের একটি অপরিহার্য জেলা হিসেবে দিনাজপুর তার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত।

দিনাজপুরে ভ্রমণকারী পর্যটকদের তিনটি প্রধান স্থানগুলো কি কি ?

দিনাজপুরের তিনটি প্রধান দর্শনীয় স্থান পর্যটকদের কান্তজী মন্দির, রামসাগর দিঘি এবং সিংড়া বনের প্রতি আকৃষ্ট করে।

কোন সময়ে দিনাজপুর তার সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে অস্তিত্বে স্বাগত জানায়?

মুনির চৌধুরী দিনাজপুর শহরে তার জন্মস্থান স্থাপন করেন।

দিনাজপুর জুড়ে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি বিদ্যমান কি?

দিনাজপুরের তিনটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে কান্তজী মন্দির, রামসাগর দিঘি এবং দিনাজপুর রাজবাড়ি।

দিনাজপুরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম আছে?

দিনাজপুরে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনোযোগ আকর্ষণ করে তার মধ্যে রয়েছে দিনাজপুর সরকারি কলেজ এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।