তায়কোয়ান্ডোর বিশ্বমঞ্চে কাশ্মীরের তারকা ড্যানিশ মঞ্জুর।
- আপডেট সময় : ১২:৪১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
- / 109
তায়কোয়ান্ডোর বিশ্বমঞ্চে- ড্যানিশ মঞ্জুর কাশ্মীর থেকে উঠে এসে একজন উজ্জ্বল তারকা হয়েছেন। তার কঠিন পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার সাফল্য অর্জন।
কাশ্মীরের গর্ব, তায়কোয়ান্ডোর রাজা:
একজন অসাধারণ তায়কোয়ান্ডো খেলোয়াড়, যিনি কাশ্মীরের বারামুল্লা অঞ্চলের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন।
ভারতীয় অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন অন্যতম উজ্জ্বল তারকা।
২. ছোটবেলা থেকেই স্বপ্নের পথে:
মাত্র ১৩ বছর বয়সে তায়কোয়ান্ডোর সাথে যুক্ত হওয়া , খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন।
২০১১ সালে শের-ই-কাশ্মীর ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নর্থ ইন্ডিয়া ন্যাশনাল তায়কোয়ান্ডো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জয় করে তিনি তার যাত্রা শুরু করেন।
এই প্রথম সাফল্য তার মধ্যে একটি আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছিল, যা পরবর্তীতে সকল সাফল্যের পিছনে প্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে।
৩. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের সিঁড়ি:
তার সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ। ২০১৩ ও ২০১৫ সালের জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতাগুলোতে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স দর্শকদের মুগ্ধ করে।
২০২১ সালে পাঞ্জাবের রোপারে অনুষ্ঠিত টোকি তায়কোয়ান্ডো ওপেন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যপদক জয় করে তিনি নিজের দক্ষতা আরও একবার প্রমাণ করেন।
বিশেষ করে, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে তার একক হাতে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে ফাইনালে উঠে যাওয়া দর্শকদের মনে গভীর ছাপ রেখেছিল।
৪. আন্তর্জাতিক মঞ্চে ড্যানিশের ছাপ:
সাফল্য কেবল জাতীয় মাত্রায় সীমাবদ্ধ নয়। ২০১৭ সালে এশিয়ান ইনডোর গেমস টেস্ট ইভেন্টে ৫ম স্থান অর্জন করে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের পরিচয় দেয়।২০২২ সালে ইসরায়েল ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতেও তিনি দেশের পতাকা উঁচু রাখেন।এই ইভেন্টে তিনি বিশ্বখ্যাত কোচ মিস্টার পলগ্রিনের অধীনে উচ্চ পারফরম্যান্স প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশগ্রহণের সুযোগ পান, যা তার ক্যারিয়ারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়। বিশেষ করে, দক্ষিণ কোরিয়ার গ্যাংওয়ানে অনুষ্ঠিত বিশ্ব তায়কোয়ান্ডো অক্টাগন ডায়মন্ড জি৪ অলিম্পিক র্যাঙ্কিং ইভেন্টে ৫ম স্থান অধিকার করে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের নাম অমর করে রাখেন। এই ইভেন্টে তার প্রতিপক্ষরা ছিল বিশ্বের শীর্ষ খেলোয়াড়রা। তাদের মধ্যে একজনকে পরাজিত করার জন্য একটি জটিল কৌশল ব্যবহার করতে হয়েছিল, যা তার দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।
৫. ফিট ইন্ডিয়া অ্যাম্বাসেডর:
তায়কোয়ান্ডোর বিশ্বমঞ্চে-অসাধারণ সাফল্যের জন্য তিনি ভারতের প্রথম তায়কোয়ান্ডো অ্যাথলিট হিসেবে ফিট ইন্ডিয়া অ্যাম্বাসেডর হওয়ার সম্মান পেয়েছেন।
এই ভূমিকায় তিনি তরুণ প্রজন্মকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে উৎসাহিত করবেন।
তিনি বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে যাচ্ছেন এবং তরুণদের মধ্যে গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করছেন। তিনি মনে করেন যে তায়কোয়ান্ডো শুধুমাত্র একটি খেলা নয়, এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী।
৬. অনুপ্রেরণার উৎস:
তিনি ড্যানিশ মঞ্জুর কেবল একজন খেলোয়াড় নন, একজন অনুপ্রেরণা।কাশ্মীরের মতো অঞ্চল থেকে এসে তিনি যা অর্জন করেছেন, তা তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তার সাফল্য প্রমাণ করে যে কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার মাধ্যমে সব কিছুই সম্ভব।
সাফল্যের পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে:
কঠোর পরিশ্রম: তিনি দিনরাত এক করে অনুশীলন করেছেন।
নিষ্ঠা: তিনি তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবসময় নিজেকে দিয়েছেন।
ধৈর্য: তিনি ব্যর্থতাকে সামলে নিয়ে আবারও নতুন করে শুরু করেছেন।
অনুপ্রেরণা: তার পরিবার এবং কোচ তাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছেন।
কীভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করতে পারে?
স্বপ্ন দেখতে শেখানো: ড্যানিশ মঞ্জুর আমাদের শেখায় যে, স্বপ্ন দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কঠোর পরিশ্রম করতে শেখানো: তিনি আমাদের শেখায় যে, সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
ধৈর্য ধরতে শেখানো: তিনি আমাদের শেখায় যে, ব্যর্থতা আসলে ব্যর্থতা নয়, এটি শেখার একটা সুযোগ।
নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে শেখানো: তিনি আমাদের শেখায় যে, নিজের উপর বিশ্বাস রাখলে আমরা সব কিছু করতে পারি।
তার সাফল্যের গল্প সকলকে অনুপ্রাণিত করে যে, স্বপ্ন দেখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা অবশ্যই আসবে। তিনি শিখিয়েছেন যে, কোনো বাধা আমাদের স্বপ্ন পূরণে বাধা হতে পারে না। যদি নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখি এবং কঠোর পরিশ্রম করি, তাহলে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারি।