ঝালকাঠি জেলার পরিচিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
- আপডেট সময় : ০১:১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ অগাস্ট ২০২৪
- / 243
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি জেলা ঝালকাঠি। এই জেলার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। ঝালকাঠি জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদী এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ দ্বারা সুপরিচিত।
ঝালকাঠি জেলার ভৌগলিক অবস্থান
ঝালকাঠি জেলা বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত। এই জেলার উত্তরে বরিশাল জেলা, পূর্বে বরিশাল ও পিরোজপুর জেলা, দক্ষিণে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা এবং পশ্চিমে পিরোজপুর জেলা অবস্থিত।
মোট এলাকা এবং জনসংখ্যা
ঝালকাঠি জেলার মোট আয়তন প্রায় ৭০৬.৭৬ বর্গ কিলোমিটার। ২০১১ সালের আদমশুমারীর তথ্য অনুযায়ী, এই জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬,৪৪,৮৮৯ জন।
ঝালকাঠি জেলার প্রশাসনিক বিভাগ
ঝালকাঠি জেলা চারটি উপজেলায় বিভক্ত। এই উপজেলাগুলো হল:
- ঝালকাঠি সদর
- নলছিটি
- রাজাপুর
- কাঠালিয়া
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও দর্শনীয় স্থান
ঝালকাঠি জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপার। নদী, খাল, বিল এবং সবুজ ধানক্ষেত এই জেলার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য। ঝালকাঠি জেলার কিছু উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান হল:
- গাবখান সেতু: গাবখান নদীর উপর অবস্থিত এই সেতু থেকে মনোরম দৃশ্য দেখা যায়।
- সুজিপুর জমিদার বাড়ি: পুরানো স্থাপত্যের এই বাড়িটি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
- বিধান চন্দ্র কলেজ: এই কলেজের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর।
ঝালকাঠি জেলার ইতিহাস
ঝালকাঠি জেলার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা বহু সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত। এই জেলার নামকরণের পেছনে বিভিন্ন কাহিনী রয়েছে। বলা হয়, ঝালকাঠি নামটি এসেছে ঝাল অর্থাৎ খরগোশ এবং কাঠি অর্থাৎ নদীর নাম থেকে।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ
ঝালকাঠি জেলা থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ জন্মগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির নাম নিম্নরূপ:
নাম | পরিচিতি |
---|---|
আবদুল জলিল | রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা |
শামসুর রহমান | কবি, সাহিত্যিক |
মোহাম্মদ সিদ্দিক | শিক্ষাবিদ |
ঝালকাঠি জেলার অর্থনীতি
ঝালকাঠি জেলার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, আম এবং বিভিন্ন শাকসবজি এই জেলার প্রধান ফসল। পাশাপাশি মৎস্য চাষ ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কৃষি
ঝালকাঠি জেলার মাটি উর্বর। এখানে ধান, পাট, সবজি এবং ফলমূল চাষ হয়। কৃষি ঝালকাঠি জেলার প্রধান জীবিকা।
মৎস্য চাষ
নদী ও খালের কারণে মৎস্য চাষও এখানে বেশ প্রচলিত। মাছ চাষ করে অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
ঝালকাঠি জেলার শিক্ষা ব্যবস্থা
ঝালকাঠি জেলায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও কিছু কলেজ এবং মাদ্রাসা আছে।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- নলছিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- রাজাপুর কলেজ
- কাঠালিয়া কলেজ
Credit: www.facebook.com
Credit: www.youtube.com
ঝালকাঠি জেলার সংস্কৃতি
ঝালকাঠি জেলার সংস্কৃতি বহুমাত্রিক। এখানে বিভিন্ন উৎসব, মেলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালিত হয়।
উৎসব ও মেলা
ঝালকাঠি জেলায় বিভিন্ন ধরনের উৎসব পালিত হয়। পহেলা বৈশাখ, ঈদ, দুর্গাপূজা ইত্যাদি উৎসব এখানে বড় আকারে পালিত হয়। এছাড়াও গ্রামীণ মেলা এবং পিঠা উৎসবও জনপ্রিয়।
উপসংহার
ঝালকাঠি জেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ দ্বারা সমৃদ্ধ। এই জেলার মানুষের জীবনযাপন, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি অন্য সকল জেলার থেকে কিছুটা আলাদা। ঝালকাঠি জেলার পরিচিতি এবং গর্ব আমাদের সবার জন্য একটি গর্বের বিষয়।
Frequently Asked Questions
ঝালকাঠি জেলা কোথায় অবস্থিত?
ঝালকাঠি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত।
ঝালকাঠির প্রধান আকর্ষণ কি?
ঝালকাঠির প্রধান আকর্ষণ শীতলপাটি, রাজকাঠি, এবং ঐতিহাসিক নলছিটি।
ঝালকাঠিতে কোন বিখ্যাত ব্যক্তির জন্ম?
মুন্সী আবদুল গফ্ফার, ঝালকাঠি জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি। তিনি সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ছিলেন।
ঝালকাঠির মূল অর্থনীতি কী?
ঝালকাঠির মূল অর্থনীতি কৃষি ও মৎস্যচাষ নির্ভর। এছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ঝালকাঠিতে কোন উৎসব বেশি জনপ্রিয়?
ঝালকাঠিতে দুর্গাপূজা ও ঈদ উৎসব বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
ঝালকাঠি জেলার প্রধান খাবার কি?
ঝালকাঠির প্রধান খাবার পান্তাভাত ও ইলিশ মাছ। এছাড়া শীতলপাটি পিঠা বিশেষভাবে জনপ্রিয়।