ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সুইসাইড নোটে অভিযোগ লিখে আত্মহত্যা ফাইরুজ অবন্তীর আত্মহত্যা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তীকা সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা।

অনলাইন ডেস্ক,
  • আপডেট সময় : ১০:১৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪
  • / 258

Photo: Fairuz Abontika

১৫ তারিখে শুক্রবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় তার সভাপতি আম্মান সিদ্দিকী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম কে আত্মহত্যার প্ররোচনা দায়ী করে,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোট লিখে যান।

ফাইরুজ অবন্তিকা’র সুইসাইড নোটঃ

“আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানান ভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্ট দের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎসাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে ” খানকি তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে? ”
আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিকাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া আর সো কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না
আমি উপাচার্য সাদোকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম।
আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজার টা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার”

আত্মহত্যাকারী ফাইরুজ অবন্তীকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ফাইরুজ অবন্তীকা শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনা প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ফাইরুজ অবন্তিকার সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার সহ বিচার দাবি করছে তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

সুইসাইড নোটে অভিযোগ লিখে আত্মহত্যা ফাইরুজ অবন্তীর আত্মহত্যা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তীকা সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা।

আপডেট সময় : ১০:১৯:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

১৫ তারিখে শুক্রবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় তার সভাপতি আম্মান সিদ্দিকী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম কে আত্মহত্যার প্ররোচনা দায়ী করে,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোট লিখে যান।

ফাইরুজ অবন্তিকা’র সুইসাইড নোটঃ

“আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানান ভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করতেসে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্ট দের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎসাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে ” খানকি তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেনো? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে? ”
আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিলো। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিকাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া আর সো কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না
আমি উপাচার্য সাদোকা হালিম ম্যামের কাছে আপনি এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে বিচার চাইলাম।
আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজার টা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার”

আত্মহত্যাকারী ফাইরুজ অবন্তীকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ফাইরুজ অবন্তীকা শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনা প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ফাইরুজ অবন্তিকার সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার সহ বিচার দাবি করছে তারা।